
বাবুল খাঁন, স্টাফ রিপোর্টার: পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের,পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কফি ও কাজুবাদাম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পে বান্দরবান সদর, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি চার উপজেলায় কতজন কৃষককে এই প্রকল্পের আওতায় কফি ও কাজুবাদাম চারা বিতরণ করেছেন তার কোনো হদিস মিলছে না। চাষিদের নামে মাত্র চারা দিয়ে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিট অফিসে এই প্রকল্পের কোনো অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই প্রকল্পের আওতায় চার উপজেলায় কতজন সুবিধাভোগী আছেন এবং চার উপজেলায় কতজন কর্মকর্তা/কর্মচারী কাজ করছেন, প্রকল্পের বর্তমান কার্যক্রমের কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না বান্দরবান ইউনিট অফিসে।
প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী কৃষকদের মাঝে কফি ও কাজুবাদাম চারা থেকে শুরু করে সার, কীটনাশক, স্প্রে মেশিনসহ প্রয়োজনীয় কৃষি সামগ্রী বিতরণ করার কথা থাকলেও অনেক এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া হয়নি এমনই অভিযোগ কৃষকদের।
সরজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কৃষকদের নিম্ন মানের চারাগাছ বিতরণ করায় অধিকাংশ চারাগাছ মরে গেছে। অনেক কৃষক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কিছু কফি ও কাজু বাদামে চারা দিয়েছে কিন্তু কোনো রকম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি। চারা রোপণ ও পরিচর্যা বিষয়ে ধারণা না থাকায় চারা মরে গেছে।
সার্বিক বিষয়ে চিম্বুক এলাকার কৃষক রুনপাও ম্রোর স্বামী পারিং ম্রো বলেন, আমার স্ত্রীকে ৩১০টি কাজুবাদামের চারা দিয়েছে। চারাগুলো রোপণ করার পর মরে গেছে। এই প্রকল্পের একটি সাইনবোর্ড টাঙানো ছিল। গত কয়েক দিন আগে উন্নয়ন বোর্ড অফিসের লোক পরিচয় দিয়ে সাইনবোর্ড খুলে নিয়ে গেছে। কেন নিয়ে গেছে কিছুই জানি না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ হালনাগাদ ২৭ আগস্ট ২০২৩ ইং হিসাব মতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কফি ও কাজুবাদাম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কফি ও কাজুবাদাম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্প, জুলাই-২০২০ হতে জুন-২০২৫ খ্রি.পর্যন্ত প্রাক্কলিত ব্যয় ৪১০৪.৯০ লক্ষ টাকা ব্যয় ২ হাজার কৃষক পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করে ১ একর করে ৮০০টি কফি ও ১,২০০ টি কাজুবাদাম বাগান সৃজনের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ সৃষ্টি। প্রকল্পের মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ২ হাজারটি কৃষক পরিবার- রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, নানিয়ারচর, কাপ্তাই ও জুরাছড়ি উপজেলা। খাগড়াছড়ি জেলার খাগড়াছড়ি সদর, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও রামগড় উপজেলা। বান্দরবান জেলার বান্দরবান সদর, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলা।
প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ১.০০ একর করে ৮০০টি কফি ও ১,২০০ টি কাজুবাদাম বাগান সৃজনের মাধ্যমে ২,০০০ পরিবারের আত্ম কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। কফি ও কাজুবাদাম চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ২,০০০ কৃষকের দক্ষতা উন্নয়ন ৫০০ জন কৃষকের উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ ২০০ জনকে উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান। ১০টি জিএফএস ও ১২টি পানির উৎস ও ১৫ টি ড্রিপ ইরিগেশন সৃষ্টির মাধ্যমে পানি সরবরাহের সুযোগ সৃষ্টি। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার প্রান্তিক কৃষকগণ উপকৃত হবেন। ২০০০ একর হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য মো. জসীম উদ্দীন বলেন, এখন কোনো তথ্য দেয়া যাবে না। ৩০ জুন প্রকল্প মেয়াদ শেষ হলে তিনি বান্দরবানে এসে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য দেবেন।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথে কথা বলেছেন। তিনি সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা না বলার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।