মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী: দীর্ঘ ১১ বছর পর নীলফামারীতে বিএনপি নেতা রব্বানি হত্যার অভিযোগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ও নীলফামারী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরসহ আওয়ামী লীগের ৪১ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আরও ১০০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
রোববার দুপুরে নীলফামারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এ হত্যা মামলা দায়ের করেন রামগঞ্জের ঘটনায় নিহত বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর স্ত্রী শাহানাজ বেগম। এতে আদালত মামলা গ্রহণ করে নীলফামারী থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন- নীলফামারী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুজার রহমান, সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ আপেল, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকার, পলাশবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম তালুকদার প্রমুখ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর বাড়িতে তাকে হত্যার উদ্দেশ্য খুঁজতে যায়। সেখানে তাকে না পেয়ে তার পরিবারের লোকজনকে মারধর করে বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি কয়েকজন যুবক ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়৷ পরে ১৮ জানুয়ারি নীলফামারী-ডোমার সড়কের বালাপাড়া (গোঁতামারী ব্রীজ) শ্মশান এলাকার বাঁশঝাড়ে রব্বানীর মরদেহ দেখে স্থানীয়রা জানায়। এদিকে রব্বানি মৃত্যুর খবরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসাদুজ্জামান নূরের নির্দেশে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন।
এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এম আর সাঈদ বলেন, মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করতে আদালত থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। সেটির রেকর্ড করার প্রক্রিয়া চলমান আছে।
এছাড়াও গেল ৪ আগস্ট নীলফামারী জেলা বিএনপি ও সেচ্ছাসেবক দলের কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগসহ জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটতারাজের মামলায় আসাদুজ্জামান নূরকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম বাবলা।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী সৌমিক হাসান সোহান মামলায় আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্য গুলির নির্দেশদাতা হিসাবে ১ নম্বর আসামি করা হয় সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।