
বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে পুলিশের কাছ থেকে আসামী ছিনতায়ের সময় পুলিশ ও স্থানীয় জনগণের সংঘর্ষে একজন নিহত ও ১৫ জন আহতের ঘটনা ঘটেছে।
২০ জুলাই বৃহস্পতিবার ভোর রাত সাড়ে ৩ টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর পূর্বপাড়া এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আইয়ুব নূর ভূইয়া (৫৫) উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের মৃত মন্তু ভূইয়ার ছেলে। আহতরা হলেন, সালমা, পিমন, শাবনাজ, শেলিনা ও ইমন মিয়া। এছাড়াও ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
জানা যার, বিজয়নগর থানার এসআই সায়েদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরার উদ্দেশ্য রাত ৩ দিকে এসে নিহত আইয়ুব নূর ভূইয়ার ছেলে ঘরে ডাকাডাকি করে। আসামি ঘরে না থাকায় এবং ঘরে পুরুষ লোক না থাকায় প্রথমে মহিলারা গেইট না খুললেও পরে তাদের ডাকাডাকিতে খুলতে বাধ্য হয়। এসআই সাইদুল ঘরে ডুকে খুঁজাখুঁজি করে আসামি খুঁজতে উপস্থিত মহিলাদের চাপপ্রয়োগ করে এবং মহিলারা প্রতিবাদ করায় সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
নিহত আইয়ুব নূর ভূইয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, উনার ছেলের ঘরে পূত্রবধুদের সাথে পুলিশের খারাপ আচরণ শুনে এগিয়ে গেলে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে গুলি চালায়। এতে পুরুষ মহিলা ও শিশু সহ ৬/৭ আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে আইয়ুব নূর মারা যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরো ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে এসআই সায়েদুল সহ ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
প্রতিবেশি জিল্লু মিয়ার স্ত্রী নেহারা বেগম এর টিনের ঘরে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়।
এ ব্যাপরে পত্তন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, সকালে খবর পেয়ে আমি ঘটনা স্থলে এসেছি। নিহত আইয়ুব নূর ভূইয়া নিরহ প্রকৃতির বয়স্ক একজন লোক। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। পুলিশের এসআই সায়েদুল এর নেতৃত্বে পুলিশ এসে আসামি ধরার নামে বাড়ির মহিলাদের সাথে খারাপ আচরণ করে এবং গায়ে হাত তুলে। উক্ত বিষয় আশেপাশের লোকজন প্রতিবাদ করায় তারা এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করেন। এতে পুরুষ মহিলাসহ ৫/৬ জন গুরুতর আহত হয়। আইয়ুব নূর ভূইয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যায়। বাকীরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। আমি ঘটনার সুষ্ঠু দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
বিজয়নগর থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আসামী আরিফ ভূইয়া ও নিহত আইয়ুব নূর ভূইয়ার বিরুদ্ধে মাদক, দাঙ্গাসহ ৫ টি করে মামলা রয়েছে। এছাড়াও পলাতক আরেকজন ১১ মামলার আসামী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, একাধিক মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী আরিফ ভূইয়া (২৪) কে বিজয়নগর থানা পুলিশ গ্রফতার করলে তাকে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নিতে তার পরিবারের লোকজন সহ আশেপাশের লোকজন পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে শর্টগান ফায়ার করে। এসময় ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।