বুধবার, ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বোচাগঞ্জে মীরা কাশ্মীরির অপরাধ সাম্রাজ্য, পুলিশের নীরব ভূমিকা

দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ থানার অন্তর্গত ১ নম্বর নাফানগর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম আবাসনে গড়ে উঠেছে একটি ভয়ংকর অপরাধ সাম্রাজ্য। এর মূলহোতা হিসেবে উঠে এসেছে স্থানীয় ইউপি মহিলা সদস্য মীরা কাশ্মীরির (৪০) নাম।

যার বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক ব্যবসা, দেহ ব্যবসা, সরকারি অনুদান আত্মসাতসহ অসংখ্য গুরুতর অভিযোগ।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে— হাজারো অভিযোগ থাকার পরেও পুলিশ কেন তাকে আইনের আওতায় আনতে ভয় পায়? এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের মতে, মীরা কাশ্মীরি, তার স্বামী আব্দুল আলীম (৪৫), সহযোগী আব্দুল মালিক ওরফে চৌধুরী (৬০) পিতা মৃত মছির উদ্দিন এবং আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন একত্রে গড়ে তুলেছেন একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র। এই চক্রের বিরুদ্ধে

অভিযোগ রয়েছে— মাদকের রমরমা ব্যবসা, যা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত চালানো হচ্ছে। দেহ ব্যবসার সিন্ডিকেট পরিচালনা, যেখানে কিশোরী ও বিবাহিত নারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করা হয়। সরকারি গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী গরিব-অসহায় মানুষদের ঘর থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ। সরকারি প্রকল্প ও অনুদান সামগ্রী আত্মসাৎ, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, কালভার্টের টাকা আত্মসাৎ। উঠতি বয়সের ছেলেদের অপব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে বিচার-আচার ও চাঁদাবাজি। ভুয়া বিয়ে ও দেনমোহরের নামে প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় । এলাকার যেকোনো প্রতিবাদকারীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি, এমনকি গুম বা হত্যার হুমকি।

অন্যদিকে, মোছাঃ আশা আক্তার (২৬), যার পিতা লাইসুর রহমান ও মাতা লিপি আক্তার—এই নারী নিজে পাঁচটি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানার অভিযুক্ত আসামি হয়েও চক্রের ছত্রছায়ায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। তার তিনটি মেয়ে সন্তান রয়েছে, যারা এখন মায়ের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে প্রায় এতিম অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, এতসব অপরাধ সত্ত্বেও পুলিশ বারবার নীরব ভূমিকা পালন করে চলেছে। বরং কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। সাধারণ জনগণের বক্তব্য: “আমরা অসহায়, মীরা কাশ্মীরি ও তার গোষ্ঠী প্রকাশ্যে হুমকি দেয় যে কেউ মুখ খুললে তাকে গুম কিংবা হত্যা করা হবে!”

প্রশাসনের প্রতি আকুতি ভুক্তভোগী ও সচেতন নাগরিকরা চাচ্ছেন— একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‍্যাব, সেনাবাহিনীর সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ।

এই ভয়ঙ্কর অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজন সাহসী ও দৃঢ় পদক্ষেপ। প্রশাসনের নীরবতা যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে বোচাগঞ্জসহ আশপাশের ২৬টি এলাকা ভয়ঙ্কর সামাজিক অবক্ষয়ের মুখে পড়বে।

স্থানীয়দের দাবি—অপরাধী যেই হোক, ক্ষমতার মুখ না দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ