
দিপংকর রায়, দিনাজপুর : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুরের বিরলে নৌকার প্রচারে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ৯২ বছর বয়সী নারী শ্রীমতি কামবালা বেওয়াকে ঘরের চাবি তুলে দিলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার নিজস্ব অর্থায়নে সেই কামবালাসহ তিন সন্তানকে বাড়ির চাবি হস্তান্তর করলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।
জরাজীর্ণ মাটির ঘরে আর থাকতে হবে না ৯২ বছর বয়সী কামবালাসহ পরিজনকে। সাথে তার বাড়িতে যাওয়ার রাস্তার নাম তার নামে নামকরণ করে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তার পাকাকরণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। নতুন ঘর পেয়ে পরিবারের সবাই খুশি এলাবাসীও ঘর গুলো এক নজর দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন। নতুন ঘর পাওয়া কাম ৯২ বছর বয়সী কাম বালা জানালেন মুই খুব খুশি হইছু মুই মন্ত্রীর (নৌ প্রতিমন্ত্রী) মা, মোর বেটা (নৌ প্রতিমন্ত্রী) মোক ঘর বানাই দিছে। মোর আর কোন কষ্ট নাই। খুব ভাল লাগেছে মোক। নৌ প্রতিমন্ত্রীর এমন উপহারে এলাবাসীও অনেক খুশি। কামবালা বেওয়ার ছোট ছেলে শিবেন্দ্র নাথ আনন্দিত ও উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেন আমরা কখনোই এমন ঘর তৈরী করতে পারতাম না। স্বপ্নেও ভাবি নাই নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মা সহ তিন ভাইকেই ঘর উপহার দিবেন।
৯২ বছর বয়সী কাম বালা বেওয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের গদাবাড়ী গ্রামের নৌকার প্রচারে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন। পরে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নির্বাচনে জয় লাভের পর কাম বালার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে কুন্ঠে বসিবা দিম তোক বেটা এমন কথা বলার পর প্রতিমন্ত্রী জানতে পারেন তিনি ভুমিহীন। তারপর থেকেই কাম বালাকে বাড়ী উপহার দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন নৌ প্রতিমন্ত্রীখালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
উপহারের ঘরের চাবি কাম বালা বেওয়ার হাতে তুলে দেওয়ার পর নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের প্রতীক, স্বাধীনতার প্রতীক, আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার প্রতি কামবালা বেওয়ার আস্থা ও বিশ্বাস আছে। আমি যখন নৌকার তাকে (কামবালাকে) ব্যাচ পরিয়ে দিচ্ছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন আমি এই প্রতীক চিনি, এই প্রতীক আমাকে চিনাতে হবে না। নৌকা মার্কার প্রতি তার আস্থা, বিশ্বাস দেখে একজন প্রার্থীও একজন ভোটারের কাছে পরাজিত হয়ে গেছে। তিনি কামবালার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছেন, কামবালা হচ্ছে ভোটার অব দ্যা ইলেকশন। তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, এটা শুধু ভোটের বিষয় না, শিক্ষারও বিষয়। একটি ভোট একটি জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে। একটি ভোট একটি দেশকে উন্নয়নের শিখড়ে নিয়ে যেতে পারে, একটি ভোট একটি জনগোষ্ঠীকে সমগ্র পৃথিবীতে জাগ্রত করতে পারে। আমি এতদিন রাজনীতি করেও যে শিক্ষা লাভ করতে পারিনি কিন্তু সেই শিক্ষা দিয়েছেন এই গদাবাড়ী গ্রামের ৯২ বয়সের বৃদ্ধা কামবালা। একটি ভোট একটি এলাকার জন্য, একটি দেশের জন্য, সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা তিনি বুঝিয়েছেন।
এ সময় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল, দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও বিরল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সবুজার সিদ্দিক সাগর ও সাধারণ সম্পাদক বাবু রমাকান্ত রায়, ধর্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক রতন চন্দ্র রায় সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।