বুধবার, ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যে কারণে খুন বগুড়ার স্কুলছাত্র তামিম

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ায় স্কুলছাত্র তামিম (১৩) হত্যার সাথে জড়িত মূল আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোর রাত ৪টার দিকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও শেরপুর থানার যৌথ অভিযানে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমইন গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুকুর পাড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১টি চটের বস্তা, গরু বাঁধার রশি, ১টি স্যান্ডেল, ১টি বেডসিট ও প্লাস্টিকের ড্রাম কেটে বানানো নৌকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামি হলেন- শেরপুর উপজেলার দক্ষিণ আমইন গ্রামের মো. খাদেমুল ইসলামের ছেলে মো. এমদাদুল হক (২২)। তিনি মান্নানের পুকুর ও গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করতেন।

শুক্রবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নবাগত পুলিশ সুপার জাকির হাসান এ তথ্য জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমইন গ্রামের একটি জলাশয়ে ভাসমান অবস্থায় বস্তাবন্দি স্কুলছাত্র তামিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তামিম একই গ্রামের মো. মুকুল আকন্দের ছেলে। সে স্থানীয় কেল্লা বাজারস্থ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। এ ঘটনায় তামিমের মা সুফিয়া খাতুন শেরপুর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন।

পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি জানায়, তিনি মান্নানের পুকুর ও গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে তামিম পুকুর পাড়ের ঘর থেকে মাছের কিছু খাবার নেয়। এসময় এমদাদুল তাকে দেখে ফেলে এবং তামিমকে তার সাথে খারাপ কাজ করতে বলে। তামিম তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এমদাদুল তামিমকে মালিকের কাছে ধরিয়ে দিবে বলে ভয় দেখায়। তামিম ভীত হয়ে আসামির প্রস্তাবে রাজি হয়। তখন আসামি তামিমকে পুকুর পাড়ের একটি ঘরে নিয়ে যায় এবং তামিম এর সাথে সঙ্গমের ফলে তার মলদ্বার ফেটে যায়।

এসময় তামিম কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে আসামি এমদাদুল হক দুই হাত দিয়ে তামিম এর গলা চেপে ধরে। একপর্যায়ে তামিমের গলাই রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে আসামি এমদাদুল হক ঘরে থাকা পাটের বস্তার মধ্যে তামিম এর লাশ ভরে প্লাস্টিকের ড্রামের তৈরি নৌকায় তুলে পাশের পুকুরের মাঝখানে ফেলে দেয়।

তিনি আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধা আকতার, আব্দুর রশিদ, মোতাহার হোসেন, সুমন রঞ্জন সরকার, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মোস্তাফিজ হাসান, শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে স্কুললছাত্র তামিম বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর বাড়ি ফিরেনি। পরিবারের সদস্যরা সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু তার সন্ধ্যান মেলেনি। পরে ওইদিন রাতেই ছেলে নিখোঁজ হয়েছে মর্মে পরিবারের পক্ষ থেকে শেরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এদিকে নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পরই বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে দক্ষিণ আমইন গ্রামস্থ আব্দুল হান্নান হাজীর মালিকানাধীন জলাশয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় তামিমের লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ