শনিবার, ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৮শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রৌমারীতে চোরাই গরু পাচার ঠেকাতে কাঠের সেতু ভাসিয়ে দিল এলাকাবাসী

লিটন সরকার, রৌমারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ারচর সীমান্তে চোরাকারবারিদের হাত থেকে রেহাই পেতে জিঞ্জিরাম নদীর ওপর ভাসমান সেতু ভাসিয়ে দিলো এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, ধর্মপুর ও বংশীপাড়া এলাকার একদল চেরাকারবারী সীমান্তে টহলরত বিজিবি সদস্যদের ফাঁকি দিয়ে আড়কির মাধ্যমে সীমান্তে গরু পারাপার করে আসছে। চোরাকারবারীরা ভারত থেকে পাচার করে আনা গরু ওই ভাসমান কাঠের সেতুর ওপর দিয়ে পার করতেন। স্থানীয়রা সেতুর ওপর দিয়ে গরু পার করতে চোরাকারবারীদের বাধা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এতেও তারা বাধা না শোনায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসি সেতুটির বাঁধন কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

এলাকাবাসীর দাবি, সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাধীনতার ৫২ বছর অতিবাহিত হলেও সীমান্তের পূর্ব কাউয়ারচর, পশ্চিম কাউয়ারচর, তেকানি গ্রাম, ধর্মপুর, নওদাপাড়া, চরবোয়ালমারী, হরিণধরাসহ ১২ গ্রামের ১৩ হাজার মানুষ ও ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ছিলো অবহেলিত। তাদের দুভোর্গের বিষয় জানতে পেরে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় এলাকাবাসী সীমান্তে জিঞ্জিরাম নদীর ওপর ১২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ভাসমান কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেয়। তবে সীমান্তের চোরাকারবারীরা সেই সেতু দিয়ে অবৈধ পথে আনা গরু পার করায় সেতুটির বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে যায়। এতে নতুন করে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। ফলে চোরাকারবারিরা যাতে ওই সেতু দিয়ে গরু পার করতে না পারে, তাই এলাকাবাসি সেতুটি ভাসিয়ে দেয়।

এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক ও আলম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন পর স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় পারাপারের সুবিধার্থে ভাসমান কাঠের সেতু দেওয়া হয়। কিন্ত চোরাকারবারিরা ভারত থেকে পাচার হওয়া গরু এই সেতু দিয়ে পার করতো। শত বাধা দিলেও তারা মানতো না বরং আমাদের উল্টো ভয়ভীতি দেখাতো। তাই এলাকাবাসি রাগে, ক্ষোভে ও চোরাকারবারির হাত থেকে রেহাই পেতে সেতুটির রশির বাধন কেটে ভাসিয়ে দেয়।

দাঁতভাঙ্গা ইউপি সদস্য জাকির হোসেন চোরাচালানের বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সেতু থাকলেও চোরাচালান হবে, না থাকলেও হবে। তবে তাদের জন্য সেতু ভেসে দেয়নি। অনেক সময়ে সেতুতে কুচুরিপানা জমা হলে সেতু খোলে দিয়ে পানাগুলো ভাটির দিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরেও আমি খোঁজ-খবর নেব। জনগণ যাতে দুর্ভোগে না পড়ে।

দাঁতভাঙ্গা বিজিবির কোম্পানির কমান্ডার সরকারি নম্বরে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *