
মিনহাজ আলী, শিবগঞ্জ (বগুড়া): বগুড়ার শিবগঞ্জে সাধু-সন্ন্যাসী আর বাউলদের সমাগমে অনুষ্ঠিত হলো বৈশাখী উৎসব বা পুণ্যার্থী মেলা। প্রতিবছরের মতো এবারও বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার উপজেলার মহাস্থানগড়ের হযরত শাহ সুলতান বলখী (র.) এর মাজার এলাকায় এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এ উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো সাধু-সন্ন্যাসী আর বাউলরা এসে মেলায় নিজ নিজ আস্তানা তৈরি করেন। সেখানে ভক্তদের নিয়ে আসর জমান তারা। বাউল, ফকির-সন্যাসীর মারফতি, জারি-সারি ও মুর্শিদি গানে মুখর হয়ে ওঠে প্রাচীন বাংলার রাজধানী পুন্ড্রনগর। মূল উৎসব বৃহস্পতিবার হলেও এক সপ্তাহ আগে থেকেই সারা দেশ থেকে ফকির-সন্যাসীরা উৎসবে অংশ নিতে মহাস্থানগড়ে আসতে থাকেন। মেলায় বিভিন্ন রকমের মিষ্টান্ন, খেলনা ও প্রসাধনসামগ্রীর শত শত স্টল দেখা গেছে। এছাড়া মহাস্থানের প্রসিদ্ধ কটকটির স্টল তো আছেই।
স্থানীয় কটকটি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, এই উৎসব ঘিরে প্রচুর পরিমাণে কটকটি বেচাকেনা হচ্ছে। সারা বছরের মধ্যে বৈশাখী উৎসবে বেশি বেচাকেনা হয়
মহাস্থানগড় এলাকার বাসিন্দা গোলাম রব্বানী শিপন বলেন, কবে থেকে এই উৎসব শুরু হয়েছে তা আমরা বলতে পারবো না। তবে, আমার দাদা ও তার দাদারা এই উৎসব কয়েক’শ বছরের পুরনো বলেছেন। মহাস্থানগড় সরকার পাড়ার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন জানান, কথিত আছে ইংরেজদের হটাতে ফকির মজনু শাহ মহাস্থানগড়ের এই মাজারে বসেই ফকির বিদ্রোহ পরিচালনা করেছিলেন। এই বিদ্রোহকে স্মরণীয় করে রাখতেই বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার করে এই উৎসবের আয়োজন হয়ে আসছে। আর এ কারণেই মহাস্থানের বৈশাখী উৎসবে হাজারো ফকির-সন্ন্যাসীর আগমন ঘটে।
রংপ থেকে মেলায় আসা শহিদুল ফকির বলেন, এই উৎসবে ভারত থেকেও সাধু-সন্ন্যাসীরা এসেছেন। এছাড়া সারা দেশ থেকেও এসেছেন। গুরুকে ভক্তি জানাতে আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য আমরা দল বেধে এখানে এসেছি।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহীনুজ্জামান বলেন, মেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সচেষ্ট।