সোমবার, ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

৭০০ কোটি টাকা দুর্নীতি করে দার্জিলিংয়ে সম্পদ গড়েছেন থোয়াই মং প্রু মারমা

আরাফাত খাঁন, বান্দরবান: আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী নেতাদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। কমপক্ষে ৭০০ কোটি টাকা দুর্নীতি করে ভারতের আত্মগোপনে চলে যান চট্টগ্রামের হালিশহরের সিএসডি খাদ্য গুদামের ইনচার্জ থোয়াই মং প্রু মারমা।

একাধিক সূত্রের তথ্য মতে, ৯ নভেম্বর পরিচয় গোপন করে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে আশ্রয় নেন ভারতের দার্জিলিং। সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় দালালদের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা ইমিগ্রেশনে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সূত্রের তথ্য থেকে আরও জানা যায়, অবৈধ অর্থ ভারতে পাচার করেছেন এবং বসবাসের জন্য ভারতের দার্জিলিংয়ে করেছেন বাড়ি।

মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমনের পর থেকেই তিনি খাদ্য বিভাগে আলাদীনের চেরাগ হাতে পান। নিয়ম অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ সব চাল সরকারের গুদামে রেখে পরে সেখান থেকে সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু থোয়াই মং মারমা কোনো চাল গুদামে না এনেই সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে শরণার্থী শিবিরে পাঠিয়ে দেন। টাকা লেনদেনে করতে ২০১৭ সালে সোনালী, অগ্রণী ও পূবালী ব্যাংকে ছেলের নামে তিনটি ব্যাংক হিসাব খোলেন থোয়াই মং প্রু মারমা।

বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার খাদ্য গুদাম নিয়ন্ত্রণে, খাদ্য ব্যবসায়ীদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে গড়ে তুলেছেন সিন্ডিকেট। শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় ব্যবস্থাপক হওয়ার যোগ্যতা তার নেই। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক হয়েই তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তার প্রতি সদয় থাকেন। চট্টগ্রামের হালিশহর সিএসডি খাদ্য গুদামের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দেন। এর এক মাসের মধ্যেই তিনি ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক হিসেবে সেখানকার ছয় উপজেলার খাদ্য গুদামের কর্তৃত্ব নিয়ে নেন।

কী ধরনের দুর্নীতি করে এত বিপুল বিত্তের মালিক হন থোয়াই মং মারমা? এ প্রশ্নের জবাব তার সহকর্মীদেরও অজানা।

তবে নাম প্রকাশ না করে একাধিক সহকর্মী বলেন, তিনি কক্সবাজার, বান্দরবান ও আশপাশের এলাকায় সরকারি গুদাম থেকে খাদ্য সরবরাহের মূল নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করেন। আর এক কর্মস্থলে বেশিদিন থাকেন না। ফলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাকাপাকি হওয়ার আগেই তিনি অন্য জায়গায় স্বেচ্ছায় বদলি হয়ে যান। ফলে আগের কোনো সহকর্মী তার বিরুদ্ধে আর লেগে থাকেন না।

উনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা থাকার পর কি ভাবে ভারতে গেলেন! বিষ্ময় প্রকাশ করেছে অনেকে। বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপ যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে মেসেঞ্জারে ব্লক করে দেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *