মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অফিসেই সহকর্মীকে ধর্ষণচেষ্টা, ব্যবস্থা নেয়নি রাজশাহী রেল কর্তৃপক্ষ

পাভেল ইসলাম মিমুল, উত্তরবঙ্গ: রাজশাহীতে সহকর্মীকে ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত রেলওয়ের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ ওঠার পর তাকে শুধু রাজশাহী থেকে বদলি করে পাবনার ঈশ্বরদীতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযুক্ত কর্মচারীর নাম খালেক সিকদার। তিনি রেলওয়ের একজন ফেরো প্রিন্টার। আগে তিনি রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের (সিএমই) দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। এ দপ্তরেই সহকর্মীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটিয়েছেন গেল বছরের ৭ মে। এ ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এখনো বরখাস্ত করা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে গত বছরের ২০ জুন মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন। তদন্তে পুলিশ প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে খালেক সিকদারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তবে এখনো খালেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তদন্তের নামে গড়িমসি করার অভিযোগ উঠেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, ঘটনার দিন বিকালে অফিস শেষে খালেক সিকদার ছাড়া সবাই চলে যান। তিনিও বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মোবাইল ফোন নিয়ে বের হতে ভুলে যান। তিনি মোবাইল ফোনটি নিতে গেলে তাকে জাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এ সময় ধস্তাধস্তি হলে তিনি আহত হন। পরের দিন তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তখন যন্ত্র প্রকৌশলী (সদর) ফজলে রব দুজনকে ডাকেন। সেখানে খালেক নিজের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চান। কিন্তু খালেক সিকদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ঘটনার এক মাস পর ৬ জুন রেলওয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুন। তাকে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি প্রতিবেদন দিতে গড়িমসি শুরু করেন। এজন্য ২০ জুন থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। ইতোমধ্যে পুলিশ এ মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে।

হাসিনার ওই প্রতিবেদনে প্রকৃত ঘটনা উঠে না আসায় ওই নারী রাজশাহী মহিলা সহায়তা কর্মসূচিতে অভিযোগ করেন। এ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবা সুলতানা অবশ্য সরেজমিন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এ ঘটনায় হাসিনা খাতুনকে তদন্তে রাখা উচিত হয়নি। বাহ্যিক প্রভাবের চেষ্টা ছিল, যা আমি নিজ চোখে দেখেছি।’

অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে বুধবার বিকালে হাসিনা খাতুনকে কয়েকদফা ফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। কল ধরেননি অভিযুক্ত ফেরো প্রিন্টার খালেক সিকদারও। তাই তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘খালেকের বিষয়টি আমি জানি। তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে, এটি আমার জানা নেই। অভিযোগপত্র দাখিল হলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ