
অভয়নগর প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগর উপজেলার দেয়াপাড়া গ্রামের এক বিএনপি পরিবার পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে আইনি লড়াই শেষে জয়ী হলেও সেই জমির সেচ পাম্প ও ধান রাতের আঁধারে কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষ— এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এখন তারা ন্যায়বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
জানা গেছে, স্থানীয় ‘জমিদার’ খ্যাত আবুল হক মোল্যা মারা যান তার সন্তানরা নাবালক থাকা অবস্থায়। সেই সুযোগে আরএস রেকর্ডে তার জমিজমা স্থানীয় বর্গাচাষীদের নামে রেকর্ড করিয়ে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার পুরাখালী মৌজার ৪৫ শতক জমি ভুলবশত রেকর্ড হয় মৃত খাতের মল্লিকের নামে। পরে আবুল হকের ছেলে কামরুজ্জামান রাজু ২০১৫ সালের ১১ জুন যশোর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানির পর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল ওই জমির মালিক হিসেবে রাজুদের পক্ষে রায় দেন। রায় পাওয়ার পর তারা সেখানে বোরো ধানের আবাদ করেন।
কিন্তু তাদের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ রাতের আঁধারে সেই জমির পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়। এর আগেও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে স্যালো মেশিন চুরির অভিযোগ করলেও থানা কোনো মামলা গ্রহণ করেনি।
রাজু জানান, “জমিতে আমি নিজে পাম্প বসিয়ে সেচ দিয়ে ধান আবাদ করেছি। কলেজের নাম ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ পাম্প খুলে নেয় এবং ধানও কেটে ফেলে।” অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ আছর আলী মল্লিক দাবি করেন, “আমার বাবা ওই জমি আবুল হকের পরিবারের কাছ থেকে কিনেছিলেন, সেই ভিত্তিতে আমাদের নামে রেকর্ড হয়েছে। আমরা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছি।” শ্রীধরপুর ইউনিয়ন কলেজের অধ্যক্ষ মো. কামাল শেখ বলেন, “আছর আলীরা জমিটি কলেজে দান করেছে। মামলায় রাজুরা জিতলেও আমাদের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়েছে। বর্তমানে জমিটি কলেজের কর্মচারী তারেক বন্দক নিয়ে চাষ করেছেন।”
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমাদুল ইসলাম বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এখন প্রশ্ন উঠেছে—একটি রায়প্রাপ্ত পরিবার যদি তাদের সম্পত্তি ভোগদখলে এতটা বাধার সম্মুখীন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের অধিকার কোথায়।