ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির পদত্যাগী সাংসদ উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার নির্বাচনী প্রচারণা আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পরমানন্দপুরে নিজের বাবার নামে করা হাজী মকসুদ আলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ গ্রহণ করেছেন পাকশিমুল ও অরুয়াইল দুই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতাবৃন্দ। এতে সভাপতিত্ব করেন পাকশিমুল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজ খান।
সভার মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ গ্রহণ করেন উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব, পাকশিমুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ।
এ নির্বাচনী সভায় উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের বরইচারা,পরমানন্দপুর, ফতেপুর, হরিপুর ও ষাটবাড়িয়া এই ৫ গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আবদুস সাত্তার ভূইয়া একজন ভালো মানুষ। উনি জীবনে কারো ক্ষতি করেন নি। ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে ইনশাআল্লাহ তিনি বিজয়ী হবেন। আমাদের অরুয়াইল ইউনিয়নের ৯০ ভাগ ভোট কলার ছড়াতে যাবে ইনশাল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পাকশিমুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার, সৌদী আরব বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, পাকশিমুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রিফাত বিন জিয়া, আওয়ামীলীগ নেতা কুতুবুল আলম, আইয়ুব খান প্রমুখ।
এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক বিএনপির সাংসদ উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া বলেন, আমি বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দেশে পদত্যাগ করি। পরে বুঝতে পারি আমি আমার এলাকার জনগনের কাছে দেওয়া ওয়াদা পূরণ করতে পারিনি। তাই আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে চাইছি। এজন্য আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনারা আবার আমাকে কলার ছড়া মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেন প্রক্রিয়াধীন কাজগুলো করার সুযোগ দিন। এসময় উপস্থিত সকলেই এই প্রবীণ নেতাকে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এই বিষয়ে জানতে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়ার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অরুরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেবের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সভায় অংশগ্রহণ করা পাকশিমুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়ন সবাই সাত্তার সাহেবের নির্বাচনী প্রচারণার সভায় অংশগ্রহণ করেছি। আমার পাশের ইউনিয়ন অরুয়াইল আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব সাহেবও এই সভায় অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। সভায় সাত্তার সাহেব তার পক্ষে সবাইকে প্রচারণা অংশগ্রহণ ও ভোট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে, গত ১৪ জানুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন আওয়ামী লীগের তিন নেতা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন ও শাহজাহান সাজু। গতকাল বুধবার বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা।
এর ফলে, আব্দুস সাত্তারের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়ে গেলেন জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ ভাসানী, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবারও অংশ নিতে যাচ্ছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া। তিনি এই আসনে ৫ বার এমপি ছিলেন।
