
আবুল হাশেম, রাজশাহী : আদালতের আদেশ অমান্য, অবহেলা ও আদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করায় বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) অরবিন্দ সরকার, এসআই মো: সাইদুর রহমানসহ ৭ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার বাগমারা সহকারী জজ আদালত স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি আদেশ বাগমারা থানায় পাঠানো হয়।
বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) অরবিন্দ সরকার, এসআই মো: সাইদুর রহমানকে আদালত প্রেরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়, কেন আপনি/ আপনাদের সিভিল জেলে আবদ্ধ রাখা হইবে না বা পদবী ক্রোক করা হইবে না বা আপনাদের সম্পত্তি ক্রোক করা হইবে না তদমর্মে কারণ দর্শাইবেন।
গত ৩০ জুন রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট লোকমান আলীর দায়ের করা ৪৭/২৪ ভায়োলেশন মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্র থেকে জানা যায়, রাজশাহী জেলার বাগমারা থানাধীন সূর্য্যপাড়া মৌজায় অবস্থিত ৩৮ শতক ধানী জমি যার এস.এ খতিয়ান নং-২৭৮, আর.এস খতিয়ান নং-১৫৫, সাবেক দাগ-১২৬,১২৯ আর.এস দাগ নং-১২৭ এর সুষ্ঠ ভোগ দখল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২১ সালের ০৩ ফেব্রুযারী রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট লোকমান আলীসহ ৯ জন অংশীদার একই মৌজার মৃত বাহার প্রামানিক এর ছেলে গোলাম মোস্তফা, মৃত মোজাহার হোসেনের ছেলে আব্দুল মজিদ (বলদা), আক্কেল আলীর ছেলে আশ্রাফ আলী, লফের উদ্দিন প্রাং এর ছেলে আব্দুল মজিদ, মৃত সাজেদ এর ছেলে পলাশকে বিবাদী করে বাগমারা সহকারী জজ আদালতে একটি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা দায়ের করেন। তার পরে দিন ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতের কাছে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনা করলে ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বাদীর পক্ষে এবং বিবাদীর বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করে বাগমারা থানাকে কার্যকরের আদেশ দেন। ওই সময় বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ আদালতের আদেশ কার্যকর করে এ বিষয়ে লিখিতভাবে অবহিত করেন।
পরবর্তিতে গত ১৬ জুন বাদীরা তাদের দখলীয় জমিতে সংস্কার কাজ করতে গেলে বিবাদী পক্ষ বাধা দেয়। ঘটনার এক পর্যায়ে বাগমারা থানার পুলিশ পরিদর্শক মো: সাইদুর রহমান মামলার বাদী অ্যাডভোকেট রুবাইয়াৎ কায়সার আহমেদ রাজিবসহ ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ওসির সাথে কথা বলে কাগজাদি ও আদালতের আদেশের কপি দেখালে তিনি তা জাল এবং ভুয়া দাবি করে তাদেরকে জমিতে যেতে নিষেধ করেন। এর ব্যাতিক্রম ঘটলে বাদীকে ভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানোর ভয়ভীতি দেখান। এরই প্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট লোকমান আলী বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) অরবিন্দ সরকার, এসআই মো: সাইদুর রহমানসহ ৭ জনকে প্রতিপক্ষ করে গত ৩০ জুন আদালতে ভায়োলেশন মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অ্যাডভোকেট রুবাইয়াৎ কায়সার আহমেদ রাজিব বলেন, আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ঘটনার দিন বিবাদীদের সাথে তর্কের ঊর্ধ্বে উঠে থানা পুলিশকে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করি। বাগমারা থানার ওসি সাহেবকে আদালতের সার্টিফাইড কপি দেখাই। কিন্তু তিনি সেটাকে ভুয়া বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল্য করে আমাদের ভয় দেখিয়েছেন। এটি চরমভাবে আদালত অবমাননা এবং অপরাধ বটে।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অমান্য করার কোনো সুযোগই নাই। শুধু আমি নই কেউই উপেক্ষা করতে পারবে না। গত ১৬ জুন কি ঘটেছিলো আমার মনে আছে। মামলার বাদী আমার সাথে সম্ভবত দেখাই করেনি। আমি রাজশাহীতে আছি। আদালতের আদেশ সম্পর্কে আমি এখনো কিছু জানি না।












