শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেলে তালা প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

মো. ইকবাল মোরশেদ: নোয়াখালীতে আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ক্ষুব্ধ ৮৫০ পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে মেডিকেল কলেজের ফটকে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ একাধিক পরীক্ষার্থী জানান, কলেজের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মেসি), ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ও ড্রাইভার পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল।

এতে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে প্রশ্ন ফাঁসসহ কারসাজির অভিযোগ উঠে। পরে নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রশাসন-৩ এর সিনিয়র সহকারী সচিব রাহেলা রহমত উল্লাহ বিরোধিতার মুখে পরীক্ষা স্থগিতে বাধ্য হন। এদিকে পূর্ব ঘোষণা না দিয়ে কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজের নিরাপত্তা প্রহরীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

ভেতর থেকে তালা দিয়ে গেট বন্ধ রাখায় পরীক্ষার্থীরা বাহিরে বিক্ষোভ করে। তাদের অভিযোগ, নিরাপত্তা প্রহরীরা লাঠিচার্জ করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা নোয়াখালী-কুমিল্লা মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে অবরোধ করেন। পরে পুলিশ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। পরীক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। সিলেট থেকে আসা তানিয়া রহমান নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, আমি সাড়ে ১৪ ঘণ্টা বাসে চড়ে এখানে এসেছি। প্রধান ফটকে সিট প্ল্যান লাগানো ছিল। তাও তারা পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ দিয়েছে। গোপনে নিয়োগ নেবে তাই তারা আমাদের পরীক্ষা নিতে দেয়নি। বেকার হওয়ায় আমাদের নিয়ে তামাশা করেছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করে আনসার সদস্য মো. নাহিদ বলেন, তারা গেটে ভাঙচুর চালানোর জন্য অবস্থান করেন। এছাড়াও প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করেন। লাঠিচার্জ নয় তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রশাসন-৩ এর সিনিয়র সহকারী সচিব রাহেলা রহমত উল্লাহ বলেন, আমি ধারণা করেছি এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে। আমি বলছি প্রশ্ন পরিবর্তনের জন্য। এতে কেউ রাজি হননি। তাই আমি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে একমত ছিলাম না। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছে, প্রকাশিত সার্কুলারে ছয়জনের নিয়োগ হওয়ার কথা। স্বাচিপ নেতাদের যোগসাজশে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ আগেই নিয়োগ চূড়ান্ত করে রেখেছেন।

পরীক্ষার আয়োজন ছিল দেখানো মাত্র। তাই পছন্দের প্রার্থীদেরকে প্রশ্ন আগেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। সূত্রের দাবি, মেডিকেলে টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদে চৌমুহনী পাবলিক হলের নাজমুল ও মাইজদীর শাকিল, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মেসি) পদে মাইজদীর সঞ্জয়, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ও ড্রাইভার পদে দুই স্বাচিপ নেতার গাড়ি চালককে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুছ ছালামের কক্ষে তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। অন্য কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোঃ জাহেদুল হক রনি জানান, বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে টেলিটকের মাধ্যমে পরীক্ষার তারিখ জানানোর কথা বললে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ