শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই: জামায়াত আমির

তৌফিক তাপস, নওগাঁ: জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। যে দেশে মানুষ মানুষকে সন্মান করবে, মানুষের সকল অধিকার নিশ্চিত হবে। যে দেশে কোনো যুবক বেকার থাকবে না। সকলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।

তিনি বলেছেন, জামায়াত সরকার গঠন করলে আমাদের মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) নারীদের যে সম্মান দিয়েছেন তাদের সেই সম্মান নিশ্চিত করা হবে। সেই স্বপ্নের দেশ গঠন করা কেবল মাত্র জামায়াতের দ্বারা সম্ভব নয়। দেশের সকল জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রয়োজন।

তিনি শনিবার বিকাল ৪টায় নওগাঁ নওযোয়ান মাঠে জামায়াতের নওগাঁ জেলা শাখার রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, আমরা সরকার গঠন করলে দেশের মালিক হব না, মানুষের সেবক হব। ইতিপূর্বে দূর অতীতেও দেখেছে, নিকট অতীতেও দেখেছে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের দেশের মালিক মনে করেছে তাদের কি ভয়াবহ পরিণতি। তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপিত হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল নানাভাবে জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছে। আমরা বিভেদ দেখতে চাই না। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র আমাদের সবার। কারণ বিভেদ জাতির জন্য কোনো মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না।

জামায়াতের আমির বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে আমরা ছিলাম। আল্লাহর ইচ্ছায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জুলুমের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এই ১৫ বছরে জামায়াত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দলের মত ক্ষতি আর কোনো দলের করা হয়নি। অন্যায়ভাবে আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রতীক কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের দলের ১১ জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার মধ্যে দিয়ে ঐ ফ্যাসিবাদী সরকার হত্যার রাজনীতি শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, যুব সমাজ যুগে যুগে দেশের ক্লান্তিলগ্নে, সকল অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দেশেকে রক্ষা করেছে। ঠিক তেমনই ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট জুলুমবাজ সরকারের পতন হয়েছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলন পরবর্তীতে সরকার পতনের যে এক দফার আন্দোলন তা কোনো দলের বা কোনো গোষ্ঠির আন্দোলন ছিল না। সে আন্দোলন ছিল দেশের সকল মানুষের আন্দোলন। এর কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। আল্লাহর ইচ্ছায় এই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে।

এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নানাভাবে অসুস্থ্ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, সেসব পরিবার জাতির বোঝা নয়, তারা জাতির সম্পদ। এসব পরিবারকে সন্মান দিতে হবে, মর্যাদা দিতে হবে। মুক্তির এই আন্দোলনে শহীদের প্রত্যেকের পরিবার থেকে একজনকে চাকরি দিয়ে সম্মানিত করতে হবে। আহতদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তাদের বীর বলে আখ্যা দিয়ে পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবেশিত করতে হবে।

নওগাঁ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত রোকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল সহকারী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আমির ড. মো. কেরামত আলী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য খ ম আব্দুর রাকিব, ইঞ্জিনিয়ার মো. এনামুল হক, অ্যাডভোকেট আ স ম সায়েম, অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন, মওলানা হাবিবুর রহমান, ছাত্র-শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য আ স ম মামুন শাহিন। রোকন সম্মেলন শেষে জামায়াতের নওগাঁ জেলা শাখার জন্য কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ