মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

ইসরায়েলের কারণে গাজায় হাজার হাজার শিশু অপুষ্টিতে

যায়যায়কাল ডেস্ক: গাজায় অপুষ্টির মাত্রা ‘আশঙ্কাজনক পর্যায়ে’ পৌঁছে গেছে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

জাতিসংঘের ওই সংস্থা মন্তব্য করেছে, ‘ইচ্ছে করে’ ত্রাণের প্রবাহে বাধা দেওয়া হচ্ছে, যা সহজেই এড়ানো যায়।

ইসরায়েলের এ ধরনের কার্যক্রমের কারণে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ‘গাজা উপত্যকায় বিপজ্জনক হারে অপুষ্টি বাড়ছে। জুলাই মাসে অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেড়েছে।’

২০২৫ সালে গাজায় অপুষ্টিতে ভুগে ৭৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৩ জনই জুলাই মাসে মারা গেছে। মৃতদের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৪ শিশু, পাঁচের বেশি বয়সী এক শিশু ও ৩৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আছেন।

জাতিসংঘের সংস্থাটি জানায়, ‘মৃতদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে এসে পৌঁছানোর অল্প সময় পর মারা গেছেন অথবা সেখানে আসার পর তাদের মৃত্যু নিশ্চিত হয়। তাদের দেহে অপুষ্টিতে ভোগার স্পষ্ট চিহ্ন দেখা গেছে।’

‘এই সঙ্কট চাইলেই পরিহার করা যায়। বড় আকারে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধা ও বিলম্ব সৃষ্টি অনেক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে।’

পুষ্টি অংশীদারদের বরাত দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, গাজা সিটিতে অবস্থানরত পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে।

সংস্থা আরও জানায়, গাজা সিটিতে ছয় থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুরা অপুষ্টিজনিত জটিল রোগে ভুগছে এবং সংখ্যাটি জুনের পর থেকে তিন গুণ বেড়েছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডজুড়ে শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্করা অপুষ্টিতে আক্রান্ত হলেও এ শহরে অপুষ্টির মাত্রা নজিরবিহীন হারে বাড়ছে।

খান ইউনিস ও গাজার কেন্দ্রেও অপুষ্টির মাত্রা এক মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ‘এই সংখ্যার চেয়েও অপুষ্টির প্রকৃত সংখ্যা ও মাত্রা আরও অনেক বেশি, কারণ নিরাপত্তা ও যোগাযোগ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে অনেক পরিবার স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে যেতে পারছেন না।’

রোববার থেকে প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে গাজার কয়েকটি অঞ্চলে ‘কৌশলগত যুদ্ধবিরতি’ চালু করেছে ইসরায়েল। তাদের ভাষ্য, গাজায় ক্রমবর্ধমান ক্ষুধা সঙ্কট মোকাবিলায় এই উদ্যোগ সফল হবে।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে গাজায় অনাহার ও অপুষ্টি দূর করতে টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান প্রয়োজন। গাজায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবারের ‘বন্যা’ বইয়ে দিতে হবে। বিশেষত, শিশু ও ভঙ্গুর জনগোষ্ঠী যাতে সব সময় পুষ্টিকর খাবার, ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে বলে সংস্থার দাবি।

জেনেভা ভিত্তিক সংস্থাটি জানায়, ‘ত্রাণ, চিকিৎসাসামগ্রীর এই প্রবাহ যেন নিরবচ্ছিন্ন ও বাধাহীন থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অপুষ্টিতে ভুগে অসংখ্য ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে অপুষ্টিতে ছয় জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে।

যার ফলে, গাজার যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অপুষ্টি ও অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৩৩ হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৭ জনই শিশু।

 

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ