বশির আল মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার লকার থেকে গ্রাহকের ১৪৯ ভরি স্বর্ণালংকার গায়েবের ঘটনায় চকবাজার থানায় করা অভিযোগ তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ভুক্তভোগী নারী রোকেয়া আক্তার বারী (৬৩) বাদী হয়ে সোমবার রাতে লিখিতভাবে চকবাজার থানায় এ অভিযোগ করেন।
এ প্রসঙ্গে দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছাদাত বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার লকার থেকে স্বর্ণ গায়েব হওয়ার ঘটনায় চকবাজার থানায় ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি দুদকের শিডিউল ভুক্ত। এ কারণে থানা পুলিশ অভিযোগটি জিডি মূলে গ্রহণ করে দুদকের চট্টগ্রাম পরিচালক বরাবর পাঠিয়েছে। ইতিমধ্যে দুদকের চট্টগ্রাম পরিচালক অভিযোগটি মঙ্গলবার ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ঢাকা থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসে সেভাবে অনুসন্ধান হবে।’
ভুক্তভোগী নারীর চকবাজার থানায় করা অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়। থানা পুলিশ বাদীর অভিযোগ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেছে। মামলার বাদী রোকেয়া আক্তার বারী নগরীর চকবাজার থানাধীন হিলভিউ সোসাইটির বিটিআই বেভার্লি হিলস এলাকার মৃত ডা. এম এম বারীর স্ত্রী।
অভিযুক্তরা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিব উল্লাহ, চকবাজার শাখার ব্যবস্থাপক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম শফিকুল মাওলা চৌধুরী ও লকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউনুস।
চকবাজার থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখা থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণ চুরি হওয়ার ঘটনায় সোমবার রাতে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। তবে অভিযোগপত্রের সব আসামি ব্যাংক কর্মকর্তা। ঘটনাও ঘটেছে ব্যাংকের ভেতর। অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শিডিউল ভুক্ত। এ কারণে বাদীর অভিযোগ থানায় জিডি হিসেবে গ্রহণ করে দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুদক কর্মকর্তারাই এ অভিযোগে তদন্ত করবেন।’
অভিযোগে রোকেয়া আক্তার বারী উল্লেখ করেন, ২০০৬ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখায় আমি ও আমার মেয়ে নাসরিন মারজুকা যৌথভাবে একটি লকার ব্যবহার করে আসছি। লকার নম্বর-৪৪ এবং চাবি নম্বর ৩। লকারে আমার ও আমার মেয়েসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের ১৬০ ভরি স্বর্ণালংকার ছিল। গত ২৯ মে দুপুর দেড়টায় আমার কিছু স্বর্ণালংকার আনার জন্য ব্যাংকে যাই। লকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইউনুসকে আমার লকার খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। তিনি লকার কক্ষের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক অফিসার আমার নামে বরাদ্দ করা লকারটি খোলা দেখতে পান। আমাকে বললে আমি দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ি।
লকারে রক্ষিত ১৬০ ভরি স্বর্ণালংকারের মধ্যে ১৪৯ ভরি চুরি হয়ে যায়। সেখানে মাত্র ১১ ভরি স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। চুরি হওয়া স্বর্ণালংকারের মধ্যে আছে হাতের চুড়ি ৪০ পিস ৬০ ভরি, জরোয়া সেট চারটি ২৫ ভরি, গলার সেট একটি ১০ ভরি, গলার চেন সাত পিস ২৮ ভরি, আংটি ২৫ পিস ১৫ ভরি এবং কানের দুল ৩০ জোড়া ১১ ভরি।