নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চলচ্চিত্র অঙ্গণের সকল সমিতি এখন ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আমদানির বিষয়ে একমত হয়েছে সুতরাং এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে অসুবিধা নেই।
সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ দুপুরে সম্মিলিত চলচ্চিত্রের পরিষদ নেতৃবৃন্দ ‘নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদেশী (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি ও মুক্তি প্রসঙ্গে’ শিরোনামে পত্রটি মন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তার ও সদস্য রিয়াজ, প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশীদ, সহ-সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন, প্রযোজক পরিবেশক সমিতির পক্ষে খোরশেদ আলম খসরু ও মোহাম্মদ হোসেন, ফিল্ম ক্লাবের সভাপতি কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া এবং সম্মিলিত চলচ্চিত্রের পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম কিরণ উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় কিছু শর্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির ব্যাপারে চলচ্চিত্র অঙ্গণের সবাই একমত হয়েছেন এ জন্য তাদেরকে অভিনন্দন। আমিও নির্দিষ্ট পরিমাণ আমদানির পক্ষে, অবাধ আমদানিতে আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতীতেও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার কাছে ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির দাবি উপস্থাপন করা হয়েছিল, পরে শিল্পী সমিতি আপত্তি জানিয়েছিল। সে কারণে আমি বারবার বলে এসেছি, সব সংগঠন একমত হয়ে বললে তখন আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবো। এখন সেটি সম্ভব। প্রস্তাব অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরেও আনতে হবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশে আগের তুলনায় সিনেমা বেশি হচ্ছে এবং অনেক সিনেমা বক্স অফিস হিট করছে। কিন্তু এখনও প্রতি সপ্তাহে ভালোভাবে চালানোর মতো সিনেমা সবসময় হচ্ছে না, এটি বাস্তবতা। সেই বাস্তবতার নিরিখে আপনারা সুচিন্তিতভাবে, ভেবে-চিন্তে মতামত দিয়েছেন যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ ভারতীয় হিন্দি ছবি যদি আমদানি হয় তাহলে অনেকেই আবার হলমুখী হবে এবং তখন আমাদের বাংলা ছবিও দেখতে যাবে।’
সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ তাদের পত্রে সরাসরি হিন্দি চলচ্চিত্র উল্লেখ না করলেও পরীক্ষামূলকভাবে দুই বছরের জন্য উপমহাদেশীয় বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে প্রথম বছরে ১০টি ও পরের বছরে ৮টি চলচ্চিত্র আমদানির ও প্রতিবছর ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ২০ সপ্তাহ প্রদর্শনের কথা বলা হয়। ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহা ও দুর্গাপূজার সপ্তাহে এগুলো প্রদর্শনযোগ্য নয়। এ ধরনের প্রতিটি সিনেমা আমদানি সংস্থাকে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদকে দিতে হবে এবং ছাড়পত্র নিতে হবে। এই অর্থ শিল্পী সমিতির অগ্রাধিকারসহ পরিষদ সদস্যদের কল্যাণে ব্যয় হবে। এছাড়াও যৌথ প্রযোজনা নীতিমালা সংস্কার ও শিল্পী সংগ্রহে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রকল্প চালুর প্রস্তাবনা পত্রে উল্লেখ করা হয়।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক নতুন নতুন হল বিশেষ করে সিনেপ্লেক্স চালু হয়েছে। কিছু পুরনো বা বন্ধ হওয়া হলও আবার চালু হয়েছে। আপনাদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে অনেকগুলো হল আবার চালু হবে। তখন আমাদের শিল্পীদের অভিনীত সিনেমা দেখানোরও সুযোগ আরো বাড়বে।’
তথ্যমন্ত্রীকে দেওয়া পত্রে স্বাক্ষরকারীরা হলেন, সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের আহ্বায়ক এম এ আলমগীর, সদস্য সচিব শাহ আলম কিরণ, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও প্রদর্শক মোহাম্মদ হোসেন, খোরশেদ আলম খসরু এবং সামসুল আল। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, মহাসচিব শাহীন সুমন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্রগ্রাহক সংস্থার সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু, মহাসচিব আসাদুজ্জামান মজনু, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তার, ফিল্ম এডিটরস গিল্ডের সভাপতি আবু মুসা দেবু, চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ, সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল, ফিল্ম ক্লাব সভাপতি গোলাম কিবরিয়া লিপু, চলচ্চিত্র ব্যবস্থাপক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক মো: জাহিদুল ইসলাম, চলচ্চিত্র লেখক সমিতির সভাপতি জামান আখতার, সাধারণ সম্পাদক সানি আলম, চলচ্চিত্র নৃত্য পরিচালক সমিতির সভাপতি আজিজ রেজা, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক খোকন, স্থিরচিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি জি ডি পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, চলচ্চিত্র রূপসজ্জাকর সমিতির সভাপতি সামসুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আলী বাবলু, চলচ্চিত্র অঙ্গসজ্জাকর সমিতির সভাপতি মো: নাজিম, সাধারণ সম্পাদক বাবুল, চলচ্চিত্র মারপিট সমিতির সভাপতি আরমান ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান চুন্নু।