শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

উলিপুরে সালিশী বৈঠকে ‘ধর্ষণের শিকার’ নারীর চুল কেটে দিলো মাতবররা

মোহাইমিনুল ইসলাম, উলিপুর (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভাবীকে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করে রাখে লম্পট এক দেবর। ধর্ষণের কয়েক দিন পর ধর্ষকের স্ত্রী মোবাইল ফোনে ওই ভিডিও চিত্র দেখতে পেয়ে ঘটনাটি স্থানীয় মাতবর মাইদুল ইসলামকে দেখায়। এর পর এলাকার টাউট মাতবর মাইদুল ইসলাম ধর্ষিতা ওই নারীকে ভিডিও চিত্র দেখিয়ে অনৈতিক ভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কুট কৌশল চালতে থাকে। লম্পট ওই যুবক উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের উত্তর সাদুল্যা রসুলপুর গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার ওই গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে সুরুজ্জামান এর স্ত্রী বাড়িতে না থাকায় তার ভাবীকে বাড়িতে ডেকে নেয়। এক পর্যায়ে সুরুজ্জামান ভাবীকে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণ করে এবং সেই ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখে। ধর্ষণের কয়েক দিন পর সুরুজ্জামানের স্ত্রী ওই ভিডিও চিত্র মোবাইলে দেখতে পায়। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় মাতবর মাইদুল ইসলাম ওই কলহের সমাধান করতে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায়। এর পর থেকে এলাকার খলিলুরের পুত্র মাইদুল তার সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে উভয় পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। ধর্ষণের ঘটনায় গত ৬ মে, মঙ্গলবার রাতে এক সালিশ বৈঠকে বসে স্থানীয় মাতবররা। ওই বৈঠকে মাইদুল এর নেতৃত্বে সেকেন্দার আলী, শাহীন মিয়া সহ ৫ জনের জুড়ি বোর্ড গঠন করে। ধর্ষিতা ওই নারীর ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা সহ মাথার চুল কেটে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আর ধর্ষক সুরুজ্জামানকে ২০ বেত্রাঘাত করার সিদ্ধান্ত দেয় জুড়ি বোর্ড। জুড়ি বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ধর্ষিতা নারীর মাথার চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ওই নারীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্থানীয় মাতবরগণ অন্যায় ভাবে আমার চুল কেটে দিয়ে আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্য করেছে। আমি এর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জিল্লুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি, ভিকটিম চাইলে আইনি সহায়তা করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *