বৃহস্পতিবার, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

এইডস সংক্রমণের ঝুঁকি ক্রমশই বাড়ছে

Syed Riad Mia : বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস নির্মূলের যে চ্যালেঞ্চ নিয়েছিলো, তার খুব একটা সুফল মিলছে না। বিশেষ করে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে তাদের মূল জাতিগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ বিতাডিড়ত হয়ে বাংলাদেশে আসে। মিয়ানমার থেকে আসা সেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশ প্রবেশের পর থেকে এই ঝুঁকি কিছুটা বেড়েছে।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৭৬১ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৮৮ জনের। মৃত্যুর হার ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। তবে, সরকারের গৃহীত কর্মসূচির আওতায় এইডস রোগীদের চিকিৎসার আওতা বাড়ছে। নেওয়া হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। তবে সরকারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশা করছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হলে ২০৩০ সাল নাগাদ ৯৫ শতাংশ এইডস রোগীকে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে।

প্রাণঘাতী এ রোগ নিরাময়ে সরকারকে আরও বেশি পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। শনাক্তকরণ পরীক্ষা এবং আওতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা। বিশেষ করে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, অভিবাসী, পুশব্যাক হওয়া লোকজন এবং এইডসপ্রবণ এলাকাগুলোর দিকে বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন। করোনা পরীক্ষার মতোই সীমান্ত এলাকায় সবাইকে এইচআইভি টেস্টের আওতায় আনার পক্ষেও মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাতিসংঘের এইডস-বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন এইডস রোগী মোট জনসংখ্যার ০.১ শতাংশ। বাংলাদেশে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি। তবে, চিকিৎসার আওতায় আছেন মাত্র ৮ হাজার রোগী। ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে এইডসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ১ হাজার ৫৮৮ জনের। এরপর এ বিষয়ে কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দেশে এইডস আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। নতুন রোগীদের বড় অংশই অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্য। আগে ঝুঁকিপূর্ণ চার ধরনের জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন রোগী বেশি পাওয়া গেলেও গত বছর সাধারণ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ বেড়েছে।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সর্বশেষ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ হাজার ১০৪ জনকে চিকিৎসা সুবিধার আওতায় আনা গেছে। বাকি ১ হাজার ১২৫ জন সংক্রমিত ব্যক্তি এখনো চিকিৎসার বাইরে আছেন। তবে, বাংলাদেশের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল বিভাগ দাবি করছে, আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবার আওতায় নিয়ে আসার হার প্রতিবছর বাড়ছে।

এইডস হয়েছে কি না, সে বিষয়ে ২০১৯ সালে সচেতনতার হার ছিল ৫২ শতাংশ, যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ শতাংশে। দুই বছর আগের চিকিৎসাসেবার আওতায় থাকা রোগী ছিল ৬৫ শতাংশ, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৭৭ শতাংশে।

জানা গেছে, নতুনভাবে আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে নতুন শনাক্ত হয়েছেন ২১৮ জন। এছাড়া, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২৭ জন, খুলনায় ৬৪ জন, সিলেটে ৪৫ জন, বরিশালে ২৮ জন, রাজশাহীতে ২৭ জন এবং ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে ১৫ জন করে শনাক্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এইডস রোগীদের ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে, ৭৪ দশমিক ২০ শতাংশ ২৫ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে, ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ ১৯ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে এবং ২ দশমিক ০৭ শতাংশ ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

এদিকে, ইউনিসেফ বলছে, এইডস-সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হতে পারে। এইচআইভি প্রতিরোধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রকল্পে বাড়তি বিনিয়োগ করা না হলে প্রতিদিন ৭৬ জন কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হবে। সংস্থাটির ‘শিশু, এইচআইভি ও এইডস: ২০৩০ সালের বিশ্ব’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান ধারা বজায় থাকলে এইচআইভিতে আক্রান্ত ০-১৯ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক ২ লাখ ৭০ হাজারে পৌঁছাবে।
এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৯৫ ভাগকে চিকিৎসার আওতায় আনার লক্ষ্য জাতিসংঘের। আগামী চার বছরের মধ্যে এ লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। ইউএনএইডসের গত বছরের প্রাক্কলন বলছে, বাংলাদেশে এইচআইভিতে আক্রান্তদের অনুমিত সংখ্যা ১৩ হাজার। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পরীক্ষার মাধ্যমে ৬ হাজার ৪৫৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্তের বাইরে থাকা মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে না, সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে।

বাংলাদেশে এইডসের ইতিহাস
বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। এরপর থেকে ১০, ২০, ১০০ বা ২০০ জন করে নতুন রোগী প্রতিবছর শনাক্ত হয়েছে। ২০১৮ সালে নতুন রোগী বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬৯ জনে। এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়ে প্রথম এক রোগী মারা যায় ২০০০ সালে।

২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত ১ বছরে মোট এইচআইভি টেস্ট হয়েছে ৬ লাখ ২৮ হাজার ৩১২ জনের। এছাড়া, ব্লাড স্ক্রিনিং করা হয়েছে ৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৭ জনের। ২০২১ সালে বাংলাদেশে আরও ৭২৯ জনের দেহে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী আছেন ১৮৮ জন। তাদের নিয়ে দেশে এইচআইভি আক্রান্ত সম্ভাব্য রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজার।

আলোচ্য সময়ে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণ জনগোষ্ঠী ১৮৬ জন (২৬%), রোহিঙ্গা ১৮৮ জন (২৬%), বিদেশফেরত প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্য ১৪৪ জন (২০%), ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণকারী ৬১ জন (৮%), নারী যৌনকর্মী ১৭ জন (২%), সমকামী ৬৭ জন (৯%), পুরুষ যৌনকর্মী ৫৩ জন (৭%) ও ট্রান্সজেন্ডার ১৩ জন (২%)।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এবং টিবি-লেপ্রোসী ও এইডস/এসটিডি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. খুরশীদ আলম বলেছেন, ‘দেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার কম, মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। সংক্রমণের হার কম হলেও ঘনবসতি, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন এবং অসচেতনতার কারণে এইচআইভির ঝুঁকি আছে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমারসহ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় এইচআইভি সংক্রমণের হার অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশেও ঝুঁকি বাড়ছে।

দেশে এইডসের চিকিৎসা ও সেবার পরিধি
বাংলাদেশ কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটিং মেকানিজমের সদস্যরা বলছেন, দেশে এইডসের চিকিৎসা ও সেবার পরিধি প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণেই আছে। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতার অভাবে সরকারের অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে, বেসরকারি পর্যায়ে এখনও এইডসের চিকিৎসাসেবা চালু করা যায়নি।

বাংলাদেশে সরকারিভাবে এইডসের চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেসরকারি পর্যায়ে এ সেবা নেওয়ার সুযোগ এখনো নেই। এইডস শনাক্ত করার জন্য সারা দেশে ২৭টি কেন্দ্র আছে। চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় ১১টি কেন্দ্র থেকে।

এইডসের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় না। বেশিরভাগ রোগী বাড়িতে থেকে চিকিৎসাসেবা নেন। তবে, তাদের নির্ধারিত কেন্দ্র থেকে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ করতে হয় এবং চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। বড়দের ক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার ওষুধ আর শিশুদের জন্য সিরাপ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে কারও যদি এইডসের পাশাপাশি অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা থাকে, তাহলে তার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সে রোগের চিকিৎসা নিতে হয়।

দেশে ফেরা প্রবাসীদের নিয়ে উদ্বেগ
২০১৯ সালের পর থেকে করোনার কারণে বৈধ এবং অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়া অনেকেই দেশে ফিরেছেন। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, নতুন শনাক্ত এইডস রোগীদের মধ্যে অভিবাসীর সংখ্যা বেশি। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও সংক্রমণের হার বেশি। কিন্তু, এই সময়ে করোনা এবং হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতের প্রতি সরকারের মনযোগ ছিল বেশি। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, পরীক্ষার বাইরে কিছু জনগোষ্ঠী রয়ে গেছে। এছাড়া, কয়েক বছর ধরেই দেখা গেছে, অভিবাসীদের কেউ কেউ এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরছেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জরিপে এইচআইভিতে আক্রান্ত নতুন রোগীদের ৩০ শতাংশ অভিবাসী কর্মী বা তার পরিবারের সদস্য।

সচেতনতার অভাব
এইডস বিষয়ে এখনো সচেতনতা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, ধীরে ধীরে সচেতনতা বাড়ছে। সচেতনতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কর্মসূচির কর্মকর্তারা বলছেন, এইচআইভিতে আক্রান্তদের ৫০ শতাংশই জানেন না যে, তাদের এ রোগ হয়েছে। যারা জানেন, তাদের এক–তৃতীয়াংশের বেশি চিকিৎসা নেন না। আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত ওষুধ (অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল) সেবন করতে হয়, রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়। তবে, চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিদের শারীরিক পরিস্থিতি কী, সেই তথ্য সরকারের কাছে নেই। তবে ২০১৯ সালের শেষদিকে এ বিষয়ে তথ্য সংরক্ষণের কাজ শুরু করে সরকার।

সূত্র মতে, সাধারণ জনগণের মধ্যে এইচআইভি এইডস সংক্রমণের হার ০ দশমিক ০১ শতাংশের নিচে। এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক হারে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে। মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। আগে যৌনকর্মীরা অসচেতন ছিলেন। এখন তারা অনেক বেশি সচেতন। এছাড়া, বিদেশফেরত প্রবাসীরাও এখন অনেক বেশি সচেতন। সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করা সম্ভব হলে এইডসের ঝুঁকি আরও কমানো সম্ভব।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল কবির বলেছেন, ‘আমাদের দেশকে এখন বলা চলে—লো প্রিভিলেন্স। মূলত, এইচআইভির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হাই রিস্ক কান্ট্রি। এখন আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও যেকোনো সময়ে এটি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।’

সীমান্ত এলাকায় এইচআইভি পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া দরকার কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদুল কবির বলেন, ‘আমি মনে করি এ উদ্যোগ এখন ‘‘ফরজ’’ হয়ে গেছে। কারণ, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত আছে। উভয় দেশে এইচআইভির উচ্চ হার থাকায় আমাদের রিস্ক বেশি। এসব দেশ থেকে মানুষ যতটা না আকাশপথে আসে, তার থেকে কয়েক গুণ বেশি মানুষ আসে স্থলবন্দর দিয়ে বা এই সীমান্ত দিয়ে। এজন্য আমাদের সকল পোর্ট বা বন্দরে এইচআইভির স্ক্যানিং নিশ্চিত করা জরুরি। এইডসকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ে এসব স্থানে স্ক্যানিং মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন করোনায় আক্রান্তের হার আবারও ঊর্ধ্বমুখী। এরইমধ্যে সরকার ১১ দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। বিভিন্ন স্থানে করোনার স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়েছে টেস্ট করার জন্য। সরকার কয়েকশ পিসিএল ল্যাবও বসিয়েছে। এসব ল্যাব এইচআইভি ডায়াগনোসিসের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়। এসব ল্যাবে অল্পকিছু সরঞ্জাম যোগ করলেই এইচআইভির টেস্ট করানো সম্ভব।’

এইডস থেকে সুস্থ হওয়ার পর পুনর্বাসন বা সহায়তা কেমন হচ্ছে বাংলাদেশে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদুল কবির বলেন, ‘বাংলাদেশে এর প্রচেষ্টা আছে। কিন্তু রোগী কম থাকায় এটি সীমিত আকারে করা হচ্ছে। আমাদের দেশে যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত হন, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিন্মবিত্ত শ্রেণির। ফলে, তারা নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব পান না। তবে, কিছু এনজিওর মাধ্যমে এইডস রোগীদের সহায়তা বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে থাকে জাতিসংঘ। তবে সেটা কী পরিমাণে, তা আমার পুরোপুরি জানা নেই।’

ইউএনএইডসের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার ড. সায়মা খান বলেন, ‘এইডস প্রতিরোধের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ইউএনএইডস। আমাদের আগামী পাঁচ বছরের কৌশল হচ্ছে—ইউ ইজ ইকুয়্যাল টু ইউ। আনডিটেক্টেবল ইজ ইকুয়্যাল টু আনট্রান্সমিসেবল। অর্থাৎ আমি যদি ওষুধ খেয়ে দেহের ভাইরাসকে এমন একটা পর্যায়ে কমিয়ে নিয়ে আসতে পারি যে, সেটা আর ছড়াতে পারবে না। তাহলে আমার এইচআইভিও ছড়াচ্ছে না, আমিও বেশি দিন বাঁচতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আধুনিক অনেক ওষুধ এসেছে, যেগুলোর সাইড ইফেক্ট অনেক কম কিন্তু কার্যকারিতা বেশি। এসব ওষুধ একজনের দেহে ভাইরাস অনেক কমিয়ে দিতে পারে। তবে, একেবারে নির্মূল করতে পারে না। ওষুধ খেলে আজীবনই খেতে হবে এবং ভাইরাল লোডটা কমিয়ে রাখতে হবে। এতে তার নিজের দেহে কোনো ইমপ্যাক্ট ফেলবে না, অন্যদের দেহেও ছড়াবে না। এইডসে আক্রান্ত হলেও একজন ব্যক্তি একেবারে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ