শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

, এর সর্বশেষ সংবাদ

একাদশে ভর্তি হবেন যেভাবে

যায়যায় কাল প্রতিবেদক : একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবারও ফলাফলের ভিত্তিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে হবে। তিন পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ করা হবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, আগামী ২৬ মে থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে, শেষ হবে ১১ জুন। অনলাইনে www.xiclassadmission.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাদশে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি এবং সর্বোচ্চ দশটি কলেজে পছন্দক্রমের ভিত্তিতে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

গত ১২ মে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এবার পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী, পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। আর শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২৫ লাখ। অর্থাৎ, এসএসসি পাস সবাই কলেজে ভর্তি হলেও আট লাখের বেশি আসন খালি থেকে যাবে।

ফি কত: এবার ঢাকা মেট্রোপলিটনের এমপিওভুক্ত কলেজে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের কলেজে ভর্তির ফি হবে ৩ হাজার টাকা। জেলা পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনের ভর্তির ফি ২ হাজার ও উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনে ভর্তির ফি দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ননএমপিও বা আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ফি, সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার কলেজের বাংলা ভার্সনের জন্য সাড়ে ৭ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনের জন্য সাড়ে ৮ হাজার টাকা। আর ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকার ননএমপিও কলেজে বাংলা ভার্সনে ভর্তির জন্য ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তির জন্য ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের কলেজের বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি কলেজগুলো সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ভর্তি ফি নেবে। দরিদ্র, মেধারী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য কলেজগুলোকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবেন, তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে কলেজে ভর্তি করা হবে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যে শিক্ষার্থীরা এসএসসি পাস করেছে, কেবল তারাই বোর্ডে হাতে হাতে (অনলাইনে নয়) ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া প্রবাসীদের সন্তান ও বিকেএসপি থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভাগীয় বা জাতীয় পর্যায়ে কৃতিত্বের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তির জন্য বোর্ডে ‘ম্যানুয়ালি’ আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বোর্ড প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থীকে (প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত ন্যূনতম জিপিএ এ ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য হবে) ভর্তির ব্যবস্থা নেবে।

ভর্তির যোগ্যতা: পূর্ববর্তী তিন বছরে দেশের যে কোনো শিক্ষা বোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য বছরে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। বিদেশি কোনো বোর্ড বা প্রতিষ্ঠান থেকে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বোর্ডের মাধ্যমে তার সনদের মান নির্ধারণের পর ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের মোট ৯৩ শতাংশ আসন সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচিত হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তর বা সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা এবং মোট আসনের ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এসব আসনে শিক্ষার্থী না থাকলে সেখানে মেধা কোটার মাধ্যমে ভর্তি করা হবে।

গ্রুপ নির্বাচন: বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যে কোনো গ্রুপে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। মানবিক ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায়- এই দুই গ্রুপের একটিতে আবেদন করতে পারবেন। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। যে কোনো গ্রুপ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সংগীত গ্রুপের যে কোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন।

মেধাক্রম নির্ধারণ: সমান জিপিএপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট ও প্রাপ্ত নম্বর সমতুল্য করে হিসাব করতে হবে। তাছাড়া বিভিন্ন বছরের গ্রেড পয়েন্ট ও প্রাপ্ত নম্বর সমতুল্য করে হিসাব করতে হবে। বিজ্ঞান গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান মোট নম্বর প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় নিতে হবে। যদি তারপরও প্রার্থী বাছাইয়ে জটিলতা নিরসন না হয়, তবে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়নে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।

মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের ক্ষেত্রে সমান মোট নম্বর বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে। এক গ্রুপের প্রার্থী অন্য গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে জিপিএ একই হলে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জটিলতা নিরসন না হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।

যেসব প্রতিষ্ঠানে স্কুল ও কলেজ একসঙ্গে আছে, সেখানে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত যোগ্যতা সাপেক্ষে স্ব স্ব বিভাগে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবেন। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব বিভাগে ভর্তি নিশ্চিত করেই কেবল অবশিষ্ট শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে।

যেসব কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি নিষিদ্ধ : স্থাপনের অনুমতি আছে কিন্তু পাঠদানের প্রাথমিক অনুমতি নেই, এমন কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। পাঠদানের প্রাথমিক অনুমতিপ্রাপ্ত অথবা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে অনুনোমোদিত ক্যাম্পাস এবং অনুনোমোদিত কোনো বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ