কক্সবাজার থেকে ফিরে হানিফ পারভেজ: কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ধারে ফিশারিঘাটে সামুদ্রিক মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। সামুদ্রিক মাছ খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। স্বাস্থ্য ও স্বাদের অনন্য মিশ্রণ। এসব মাছের চাহিদাও বেশি। এখন মাছের ভরা মৌসুম। জেলেরা সাগরে জাল ফেললেই ধরা পড়ছে বিভিন্ন জাতের মাছ। কক্সবাজারের ফিশারিঘাট এখন সামুদ্রিক মাছে পরিপূর্ণ। চলছে জমজমাট বেচাকেনা।
সামুদ্রিক মাছ প্রাকৃতিক পুষ্টির অমূল্য উৎস। সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার উপকারিতা বেশি। যারা সামুদ্রিক মাছ বেশি খান তাদের স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কম থাকে। প্রজাতি ভেদে সামুদ্রিক মাছের স্বাদ ভিন্ন হয় কিন্তু পুষ্টিগুণে সব সামুদ্রিক মাছই অনন্য। গুণাগুণের শেষ নেই। নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ খেলে বেশ কিছু সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। এসবের পাশাপাশি মাছে আয়োডিন, জিঙ্ক, একাধিক খনিজ রয়েছে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছে রয়েছে প্রচুর সিলোনিয়াম, যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে শরীরে কাজ করে ও বার্ধক্য প্রতিরোধ করে।
২২ ডিসেম্বর ভোরের দিকে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ওই ফিশারিঘাটে গিয়ে আরও দেখা যায়, জেলেরা গভীর সাগর থেকে সামুদ্রিক মাছ নিয়ে নদীর তীরঘেঁষা ফিশারিঘাটে শত শত ট্রলার নিয়ে ফিরছে। এর মধ্যে সামুদ্রিক মাছে আড়ত জমজমাট হয়ে উঠেছে। উৎসবের আমেজে মাছ ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে নিয়োজিত কয়েক হাজার জেলে, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা, শ্রমিকদের দম ফেলার সুযোগ নেই কারও। ব্যবসায়ীরা নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ কেনার জন্য দর কষাকষি করেন।
এর মধ্যে রয়েছে কিছু ইলিশের সঙ্গে রূপচাঁদা, লাক্ষা, কোরাল, ছুরি, গুইজ্যা, লইট্টা, কই কোরাল, রেড স্নাপার, ভেটকি, কাটল ফিশ, দেশি স্কুইড, ম্যাকারে, শ্রিম্প, ম্যাকরেল, সারডিন, লবস্টার, ফাইস্যা, চেলা, টুনা, চ্যাপা, মাইট্যা, কামিলা, পোপা মাছ।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, এখন প্রতিদিন বেচাকেনা হয় চার-পাঁচ কোটি টাকার সামুদ্রিক মাছ। অনেকে মাছ কিনে ট্রাকবোঝাই করে এসব সামুদ্রিক মাছ নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন বাজারে। মূলত এটি মাছের পাইকারি বাজার, এখান থেকে সামুদ্রিক মৎস্য দেশের ভেতরে আর বিদেশে রপ্তানি করা হয়। বাজারে ভোলা মাছ ৪৫০ টাকা কেজি, ইলিশ এক কেজি ওজনের ১৬শ’ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার থেকে ১৪শ’ টাকা, সাদা চান্দা ৬শ’ টাকা থেকে ৯শ’ টাকা, রিটা মাছ ৩৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, লবস্টার ১১শ’ টাকা থেকে ১৪শ’ টাকা, সাগরের কোরাল ৯শ’ থেকে ১২শ’ টাকা, ছুরি মাছ ২৫০ থেকে ৪শ’ টাকা, লইট্টা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, টুনা ১৫০ টাকা, দাতিনা ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা, পোপা ১৬০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, মাইট্ট্যা ৩শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন জাতের ছোট মাছ এবং মলাঢেলা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৪শ’ টাকায়।