বৃহস্পতিবার, ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

কক্সবাজারের শুঁটকি এখন ঘুরতে আসা পর্যটকদের পণ্য

কক্সবাজার থেকে ফিরে হানিফ পারভেজ: শুঁটকি একসময় গরিব মানুষের অন্যতম খাবার ছিল। এখন আর এমনটি নেই, এটি এখন বড়লোকের পছন্দের খাবারের মেন্যুর শীর্ষে। এর স্বাদ নেওয়া না অবধি যেন কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটকদেরও দেহ-মন থাকে ক্ষুধার্ত। শুঁটকির স্বাদ নেওয়ার পরই যেন লোভ মিটে পর্যটকদের।

রুচিবর্ধক খাবারের তালিকার শীর্ষে শুঁটকি মাছ। শুঁটকির একটু ভর্তা খাবারে এনে দেয় আরও স্বাদ আর মুগ্ধতা।

সৌন্দর্যের একখণ্ড স্বর্গ কক্সবাজারে ভ্রমণ পিপাসুদের খাবার এবং কিনে নিয়ে যাওয়ার তালিকারও শীর্ষে রাখা যায় শুঁটকিকে।

কক্সবাজারের কলাতলি বীচ পয়েন্ট, হিমছড়ি,মহেশখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায় শুঁটকির বাজারগুলোতে মানুষের ঢল। পর্যটকদের শুঁটকি কেনা দেখে মনে হবে, এমন কোনও পর্যটক নেই যারা শুঁটকি কিনে নাই।

বড়লেখা থেকে আসা পর্যটক বদরুল ইসলাম মনু বলেন, আমি কয়েকবার কক্সবাজার এসেছি। এখানে আসলে শুঁটকি দিয়ে ভাত খাইনি এমন নজির নেই। এছাড়া এখানকার শুঁটকি আমার এবং পরিবারের খুব প্রিয়। তাই পর্যাপ্ত শুঁটকি কিনে নিয়েছি।

ঘুরতে আসা তোফায়েল আহমদ চৌধুরী বলেন, আমরা ১২ জনের একটা টিম এসেছি। কক্সবাজার ঘুরে আজ ফিরে যাওয়ার পথে। ১২ জনের মাঝে প্রায় ১২ জনই শুঁটকি নিয়েছি।

কক্সবাজার কলাতলি বীচ পয়েন্টের সুগন্ধা মার্কেট এলাকায় ও শহরের বিভিন্ন মার্কেটে চলে শুঁটকির রাজত্ব। কক্সবাজারের বিভিন্ন বীচে অবস্থান করা পর্যটকদের নীড়ে ফেরার শেষদিন যেন থাকে কলাতলির সুগন্ধা মার্কেটে ক্রেতায় ভরপুর। শুঁটকির দোকানগুলোতে থাকে বেশির ভাগ পর্যটকদের ভিড়। বিক্রেতাদের মুখেও থাকে হাসির ঝিলিক।

এখানকার বেশিরভাগ শুঁটকি ব্যবসায়ী স্থানীয়। তারা শুঁটকির ব্যবসা করেই মূলত জীবন-জীবিকা পরিচালনা করেন। পর্যটক সিজনে চলে শুঁটকি বিক্রির ধুম। এখানকার দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক এমনটি জানা যায়।

শুঁটকি ব্যবসায়ী, বাবুল মিয়া জানান, আজ ১৮ বছর এখানে শুঁটকির ব্যবসা করছি। আমার দোকানে আমার ছেলে, আমি এবং চারজন কর্মচারী কাজ করে। আমরা নিজেরা শুঁটকি উৎপাদন করে পাইকারি-খুচরা দুটোই বিক্রি করি। আমাদের শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

শুঁটকির বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি কিনছেন লইট্যা,সুরমা ও ছুড়ি শুঁটকি। এগুলো বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৫০ থেকে ৯৫০ টাকা করে।

এছাড়া মলা শুঁটকির চাহিদাও চোখের পড়ার মত। মলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে। কাঁচকি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০০ থেকে ৭৫০;করে। সুরমা বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা করে। চেপা পুটি ও বাঁচপাতা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ করে।

এছাড়া চিংড়ি শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০০ থেকে ১৭০০ পর্যন্ত। কোরাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ১২০০ করে। রুপচান্দা ২০০০ টাকা করে, সেলমন ফিস ১৮৫০ টাকা। টুনা ফিস ১৩৫০ টাকা, বোয়াল ৯০০, গইন্যা ৮৫০, শীতল ফিস ৬০০ টাকা করে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।

সামুদ্রিক এসব শুঁটকি যেমন স্বাদের তেমন আকর্ষণেরও। দোকানে সারি সারি সাজানো শুঁটকি যে কারো নজর কেড়ে নেয় খুব সহজেই।

যায়যায়কাল/এমএমআই

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *