
মো. ওসমান গনি ইলি, কক্সবাজার: কক্সবাজারের স্বপ্নের নদী বাঁকখলী এখন অবৈধ স্থাপনা আর প্লট বিক্রির আখড়া বসেছে। ৬ কিলোমিটার নদীর তীরে শত শত বাড়ি, স্কুল, মসজিদ গড়ে উঠেছে নদী ভরাট করে—আর সেই অবৈধ দখল মুক্ত করতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার থেকে অভিযান শুরু করেছে।
মঙ্গলবার সকালে কুস্তুরাঘাট এলাকার নতুন ব্রিজ সংলগ্ন শাপলা মার্কেটে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, কোস্ট গার্ড, সেনাবাহিনী ও র্যাবের সহযোগিতায় বাঁকখলী নদীর অবৈধ দখল নির্মূলের চেষ্টা চলছে। নদীর ভরাট করে জাল খতিয়ান তৈরি করে জমি দখল ও বিক্রি করার পরিমাণ হাজারেরও বেশি।
২০১০ সালে সরকার বাঁকখলী নদী বন্দরের সংরক্ষক হিসেবে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষকে নিয়োগ দিলেও জমি হস্তান্তর না হওয়ায় নদী দখল অব্যাহত ছিল। ২০২৩ সালের শুরুতেই টানা দুদিন অভিযান চালিয়ে ৬ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়, কিন্তু আড়াই বছরের মধ্যে আবারো হাজারেরও বেশি স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
হাইকোর্ট গত ২৪ আগস্ট বাঁকখলী নদীর সঠিক সীমানা নির্ধারণ ও দখল মুক্তির জন্য চার মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কক্সবাজারে বিশেষ সমন্বয় সভায় নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও জেলা প্রশাসক উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে, এরপর নদীর সীমানা নির্ধারণ করে নদীকে ফিরিয়ে আনা হবে তার স্বাভাবিক রূপে।’
এবারের অভিযান বাঁকখলী নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনার বড় এক যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। নদী নয়, অবৈধ প্লটবাজার দখল মুক্ত করতে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তা হবে কক্সবাজারের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।