সোমবার, ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কাউনিয়ায় কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় জিপিএ-৫ পাওয়া মাফি

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি: সদ্য প্রকাশিত উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে আফরোজা আক্তার মাফি। অর্থাভাবে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণের স্বপ্ন অনিশ্চিত মাফির।

তিনি এ বছর কাউনিয়া মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। মাফির বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার পাঞ্চরভাঙ্গা গ্রামের পেপার বিক্রেতা আনোয়ার ও রাজিয়া দম্পতির কন্যা, মাফির মা পেশায় একজন গৃহিনী।

জানা যায়, মাফি শিশুকাল থেকে নিদারুন অর্থকষ্টের মধ্যে শুরু করেন পড়াশোনা। তার বাবা পেশায় একজন পত্রিকা বিক্রেতা। নিজের জমি-জমা তেমন না থাকায় পত্রিকা বিক্রি করে কোনোমতে চলে তার সংসার। তিন বোনের মধ্যে মাফি বড়। তার ছোট বোন প্রাইমারিতে পড়াশোনা করেন। মাফিব পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিওর ট্রেনিং করে পড়াশোনা খরচের যোগান দিত। শিক্ষাজীবন বারবার দারিদ্রতার কাছে হার মেনে থমকে যেতে চাইলেও মাফির অদম্য ইচ্ছা শক্তি এবং শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করতে থাকে।

কাউনিয়া মো: হো: মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে হতে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০২৪ সালে এসএসসি পাশ করেন। তিনি বড় হয়ে ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই স্বপ্ন ফিকে হতে চলেছে। মাফির আজও স্বপ্ন দেখে বুয়েট-মেডিকেল বা ভার্সিটিতে পড়তে না পারলেও যেনো মানুষের মতো মানুষ হয়। ভবিষ্যতে তার মতো অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর সামর্থ্য আল্লাহ যেনো তাকে দেন।

অদম্য মেধাবী মাফি থমকে যেতে নেই। মাফির মা বলেন- অন্য মা দের মতো আমিও স্বপ্ন দেখি আমার মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু আমাদের সামর্থ্য যে নেই!!!যতটুকু সাধ্য ছিল তা করেছি। মেয়েটার মুখের দিকে তাকালে ভাষা খুজে পাইনা।সরকারী বেসরকারি কোন সহযোগীতা পেলে আমার মেয়ে এলাকার মুখ উজ্জ্বল করবে।

আফরোজা আক্তার মাফি জানায়, তার ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন সে বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের ও দেশের সেবা করতে চান। সে লেখাপাড়া ছাড়তে চান না। কিন্তু অভাবের কারণে তার পড়াশোনা বন্ধের পথে তিনি আরোও বলেন তার এই সফল ফলাফলের পিছনে পিতা মাতা ও শিক্ষকদের অবদান রয়েছে সবচেয়ে বেশী। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ভবিষ্যৎ স্বপ্ন পূরণে সকলের দোয়া কামনা করি।

মাফির বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, মেয়ের সফলতায় প্রথম থেকেই তিনি আনন্দিত। কিন্তু ৫ সদস্যের পরিবার চালাতে তিনি হিমশিম খান। সেখানে সন্তানকে কলেজে ভর্তি করা তার কাছে বিলাসিতা। মেয়েকে ডাক্তার বানানো তারও স্বপ্ন। কিন্তু তিনি টাকার কাছে অসহায়। এখন মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তার কোনো অন্ত নেই। যদি কোনো সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পান তা হলে লেখাপড়া করাতে চান সন্তানকে।

কাউনিয়া মহিলা কলজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: রফিকুল ইসলাম, বলেন- অদম্য মেধাবী আফরোজা আক্তার মাফির প্রবল ইচ্ছাশক্তি, মানষিক দৃঢ়তা আর সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ওর লক্ষ্যে পৌছে দিবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *