
মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের কালকিনিতে অবস্থিত কালকিনি প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে যোগ্যতা, পেশাগত দক্ষতা ও মিডিয়ার কথা বিবেচনা না করে কিছু সদস্যের সেচ্ছাচারিতায় ঘরোয়া এক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রোববার বিকেলে কালকিনি প্রেসক্লাবে বসে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট এ সাজানো কমিটি গঠন করা হয়।
জানা যায়, রোববার কালকিনি প্রেসক্লাবের ২২ তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।এতে অনেক সদস্যরা নির্বাচনের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক পন্থায় কমিটি গঠনের দাবী জানালেও পরবর্তীতে তাদের সে দাবী উপেক্ষা করে নিজেদের মতো করে সাজানো এক ঘরোয়া কমিটি গঠন করা হয়। এতে দেশের শীর্ষ জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভি,প্রথমসারির দৈনিক কালবেলা,দৈনিক আমার সংবাদ,দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ,দৈনিক নবচেতনা পত্রিকা সহ বেশ কিছু মিডিয়ার প্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ঘরোয়া কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এতে প্রেসক্লাবের অনেক সদস্য,জনপ্রতিনিধি সহ সচেতন মহলে বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই বলেন,দেশের বড় বড় মিডিয়ার সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন সত্যিই হাস্যকর।
এ বিষয়ে একুশে টেলিভিশনের প্রতিনিধি ও কালকিনি প্রেসক্লাবের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুজ্জামান বলেন,”সংগঠনের গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একটি সম্পূর্ণ সাজানো কমিটি করা হয়েছে।গঠনতন্ত্রের ৩নং অনুচ্ছেদের ২(ঘ)ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে”কোন পদে পর পর দুইবারের বেশি কেউ নির্বাচিত হতে পারবেনা”।কিন্তু তা উপেক্ষা করে একই পদে কার্যনির্বাহী কমিটির একাধিক ব্যক্তিকে পর পর দুইবারের অধিক সময়ে রাখা হয়েছে।তাছাড়া একই অনুচ্ছেদের ২(চ) ধারা মোতাবেক কোন রাজনৈতিক পদধারী ব্যক্তি প্রেসক্লাবের কার্যকরী পরিষদের পদে থাকতে পারবেনা উল্লেখ থাকলেও কালকিনি উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতিকে মহিলা সম্পাদিকা করা হয়েছে।তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় এটা কোন গঠনতান্ত্রিক কমিটি না,এটা একটা স্বার্থান্বেষী মহলের নিজেদের সাজানো কমিটি।”
কালকিনি প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি রনি আহমেদ নিপুল জানান,”কমিটি গঠনে গঠনতন্ত্রের বেশ কিছু ধারা লংঘন করায় এই কমিটি সম্পূর্ণ অগনতান্ত্রিক বলা যায়।তারা প্রেসক্লাবকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে।তাই গনতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন না দিয়ে ঘরোয়া কমিটি গঠন করেছে।”
কালকিনি প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি আশরাফুর রহমান হাকিম বলেন,”প্রেসক্লাবের অনেক সদস্যদের চাওয়া ছিল একটি নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠিত হোক।কিন্তু পরবর্তীতে কয়েকজন মিলে যোগ্যদের বাদ দিয়ে এভাবে কমিটি করবে তা ভাবিনি।অবশ্যই সকলের যোগ্যতা ও মিডিয়া দেখে সুন্দর একটি কমিটি করা উচিৎ ছিল।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সদস্য জানান,”খোঁজ নিলে দেখা যাবে প্রেসক্লাবের বর্তমান কমিটির সদস্যদের অনেকের নামের পাশে উল্লেখিত মিডিয়ার বৈধ আইডি কার্ড নেই।এরা সাংবাদিক সংগঠনের পদ পায় কিভাবে?শুনেছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একসময় এই প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ছিলেন। তাই আমরা এ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ করছি।”
সবশেষে কালকিনি প্রেসক্লাবের সুনাম বজায় রাখতে অবিলম্বে এই সাজানো মনগড়া কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে পুনরায় যোগ্যতা,দক্ষতা ও মিডিয়ার কথা বিবেচনা করে সুন্দর একটি গ্রহনযোগ্য কমিটি গঠনের দাবী সুধীজনদের।












