বুধবার, ৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের কাশফুলে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

শাহদাৎ হোসেন লাল, স্টাফ রিপোর্টার: শুভ্রতায় ছেয়ে গেছে কাশবন। শরতের মেঘের সঙ্গে তার লুকোচুরি। আশ্বিন-বায়ু যেন সার্বক্ষণিক সঙ্গী। দুলছে সে সর্বক্ষণ প্রফুল্লচিত্তে। শরতে এই দৃশ্য সারাবাংলার চরাঞ্চলের। কুড়িগ্রামের নদী তীরবর্তী জেগে ওঠা অসংখ্য চরাঞ্চল এর বাইরে নয়। এই অপার সৌন্দর্য একদিকে যেমন মনের খোরাক হয়ে উঠেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে। অন্যদিকে জীবিকার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে চরাঞ্চলের নিম্নবিত্ত মানুষের।

শরতের আকাশে খণ্ড মেঘের ভেলা। তারই নিচে বালুচরে ছড়িয়ে আছে কাশফুল-দিগন্ত প্রসারী প্রকৃতির এ এক অপরূপ লীলা। দূর থেকে দেখলে মন টেনে নিয়ে যাবে এই সুন্দরের কাছে- এমনই অমোঘ এর আকর্ষণ! কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকার প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চরাঞ্চলে দেখা মিলবে এই দৃশ্যের। চরাঞ্চলগুলোতে কাশবন একটু আগেভাগেই অপরূপ সাজে সাজলেও এ বছর শেষ সময়ে বন্যা হওয়ায় একটু বিলম্বে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। তাই বলে প্রকৃতিপ্রেমীরা মন খারাপ করে বসে নেই। তারা প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে ছুটে যাচ্ছেন কাশবনে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদী অববাহিকার জগমনের চরে কাশবনে গিয়ে দেখা মেলে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের। কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিম বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন। বললেন, সত্যি অসাধারণ লাগছে! ছবি তুলছি। ঘরে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে না।

আরেক শিক্ষার্থী সুমাইয়া এর আগেও কাশবন দেখেছেন। কিন্তু এখানে অনেক বড় কাশবন। সবগুলো সাদা ফুলে ভরে উঠেছে। ভালো লাগছে। আবারও আসবো-বললেন তিনি। বেসরকারি চাকরিজীবি আব্দুর রহিম জানালেন মুগ্ধতার কথা। ক্ষণিকের জন্য হলেও শহরের কোলাহল ছেড়ে নদী, বালুচর,সাদা মেঘ,কাশফুলের মিতালী দেখে অভিভূত তিনি।

দর্শনার্থীদের কারণে এলাকার মানুষের আয় বেড়েছে। ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে অনেকেই দু’পয়সা উপার্জন করছেন। তাছাড়া কাশ খড়ের চাহিদা থাকায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন চরাঞ্চলের মানুষ। পোড়ার চরের বাসিন্দা জব্বার আলী বলেন,কাশবন যে শুধু সৌন্দর্য বিলাচ্ছে তা নয়,কাশের খড়ও বিক্রি হয় চড়া দামে। কাশবন চরের মানুষের বাড়তি আয়ের উৎস।

একই চরের আরেক বাসিন্দা ফয়েজ উদ্দিন জানান, কাশবন এমনিতেই হয়। কোনো খরচ নেই। শুধু পাহাড়া দিয়ে রাখতে হয় যাতে গজিয়ে ওঠার সময় গরু খেয়ে না ফেলে। এবার অন্তত ৪০ হাজার টাকার খড় বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদী।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ