
শাহদাৎ হোসেন লাল, স্টাফ রিপোর্টার: ১৫ বছর ধরে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ছিনাই ইউনিয়নের বৈদ্যের বাজারে প্রতিমার হাট বসান প্রতিমার কারিগররা। ইতিমধ্যে ৫ শতাধিক দুর্গা মূর্তির কাজও শেষ করেছেন।
আগামী ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য শুরু হবে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাৎসব। ১৩ অক্টোবর দশমী দিয়ে দুর্গাপূজার উৎসবের সমাপ্তির ঘটবে। প্রতিবছর শরৎ ঋতুতে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা উৎসব পালিত হয়। উৎসবকে কেন্দ্র করে দুই/তিন মাস আগে থেকে কারিগররা(ভাস্কর) প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে পূজা প্রস্তুত কমিটির লোকজন প্রতিমার বায়না দিয়েছেন বলে ভাস্কররা জানিয়েছেন। প্রতিদিনই প্রতিমা ক্রয় কিংবা দর্শন করতে ভীড় করছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বৈদ্যের বাজার সংষ্কৃত টোল বিদ্যালয়র উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিম,স্মাট ক্লাবের পাশে,বৈদ্যর বাজারের পাশে ৪টি স্পটে প্রায় পাঁচ শতাধিক দুর্গার মূর্তি,কার্তিক,গনেশ, লক্ষী,স্বরস্বতী,মহিষাসুর ও মহিষের মুন্ড সহ তাদের বাহন মূর্তি তৈরি করেছেন। অনেক জায়গায় মূর্তিগুলোকে আলাদা আলাদা আবার কিছু মূর্তি এক পাঠে (ফ্রেমে) রেখেছেন। প্রায় মূর্তিগুলোতে মাথা লাগিয়ে দিয়ে রুপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। আবার কিছু মূর্তি মাথা ছাড়াই রেখেছেন।
ভাস্করা জানান, দুই মাটি হয়ে গেছে। মূর্তিগুলো রোদে শুকিয়ে গেলে আবার এর উপর মাটি দেয়া হবে। তিনবার মাটি দিয়ে শুকানোর পর হাতের তুলির পরশে রঙ করে হয় মূর্তিগুলোকে বিভিন্ন অলংকার দিয়ে সাজিয়ে প্রকৃত রুপ দান করে বিক্রির উপযোগী করা হয়। প্রতিটি দুর্গার ফ্রেমসহ মূর্তির ধরণ হিসাবে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণ এসব প্রতিমা দরদাম করে ক্রয় করে নিয়ে যায়।
কারখানার মালিক মিতু মালাকর বলেন, তার কারখানায় ৬ জন ভাস্কর কাজ করে। এবারে ২০টি দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ হাতে নিয়েও এর মধ্যে ১০টি প্রতিমার কাজ অর্ধেক সম্পন্ন করেছে। প্রতিজন কারিগরকে মৌসুমে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। আরেক কারখানার মালিক সন্তোষ বলেন,৩০ বছর আগে সে ভারতে গিয়ে প্রতিমা তৈরি কাজ শিখে এখন নিজে তৈরি করেন। গত ৭ বছর ধরে নিজে প্রতিমা তৈরির কারখানা দিয়েছেন। সেখানে প্রতিমা তৈরি করে বিক্রি করেন। মৌসুম এলেই প্রতিমা তৈরির কাজ করে ভাল আয় করছেন শতশত প্রতিমা কারিগররা। প্রতিবছর দুর্গাপূজায় আগে বৈদ্যের বাজার এলাকায় প্রতিমা তৈরির মহোৎসব শুরু হয়।
ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাদেকুল ইসলাম নুরু জানান, বৈদ্যেরবাজার দুর্গা প্রতিমার তৈরির কারখানা থেকে প্রতিমা কারিগররা লাখ টাকা আয় করেন। সরকারি সহায়তা পেলে কারিগররা কর্মমূখী হয়ে লাভবান হবেন।