মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

কুষ্টিয়া সোনাপট্রিতে উদ্ধার হলো ঢাকার সোনা

জিয়াউল হক (খোকন),কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া সোনাপট্রি থেকে উদ্ধার হলো ঢাকায় ছিনতাই হওয়া সোনা। ঢাকা থেকে ছিনতাই হওয়া ১শ ভরি সোনা উদ্ধারে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের একটি আভিযানিক দল। গতকাল দিনব্যাপি জেলার মিরপুর ও কুষ্টিয়া মডেল থানার আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে তারা।

বিশ্বস্ত মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য মতে জানা যায়, ঢাকা থেকে চুরি যাওয়া ১শ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারে গত ২৪ মার্চ ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের একটি আভিযানিক দল কুষ্টিয়ায় অবস্থান নেন। পরবর্তীতে ২৫ মার্চ সকালে জেলার পোড়াদহ বাজারের বিশ্বাস জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত হোসেন আলী নামের একজনকে আটক করেন তারা। হোসেনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী জেলার মিরপুর থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত আরিফ, হাসান আলী, স্বজল, রফিক ও নাসিরকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। আটককৃতদের নিয়ে একই দিন বেলা আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সোনাপট্টিত সেক্রেটারি আনিস বসাক জুয়েলার্স সহ বেশ কয়েকটি জুয়েলার্সেও অভিযান চালান তারা। এসময় ছিনতাই হওয়া ১শ ভরি সোনার মধ্যে বড় একটি অংশ উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।

গোপন সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া সোনা পট্টিতে একটি সোনা কারবারি সিন্ডিকেট রয়েছে যারা চোরাই ও ছিনতাই করা সোনা কেনাবেচা করে। এ রকম তথ্য পেয়েই ডিবির একটি টিম কুষ্টিয়া সোনা পট্টিতে অভিযান চালিয়ে জেলা স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান আনিস ৬ ভরি ও বসাক জুয়েলার্স এর স্বত্বাধিকারী মনার ছোট ভাই ধনঞ্জয় পোড়াদহ বাজারের বিশ্বাস জুয়েলার্স’র মালিক হোসেন’র থেকে ৫ ভরি সোনা কিনেছে বলে জানা যায়। এছাড়াও জানা যায় মাসখানেক আগেও আনিসুর রহমান আনিসের একাউন্টে নয় লক্ষ টাকার উপরে টাকা জমা হয়। কিন্তু সেই টাকা পরবর্তীতে আবার বগুড়ার পার্টি নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে আনিস এর সাথে যোগাযোগ হলে, তিনি বলেন ১৫/২০ দিন আগে ৬ ভরি সামথিং সোনা আমি কিনেছিলাম। যা রিকভারি হিসাবে ডিবি পুলিশের কাছে জমা দিয়ে দিয়েছি। তারা আরও কয়েক জায়গায় এইসব সোনা বিক্রয় করেছে বলে তিনি জানান। তার একাউন্টে টাকা আসার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন বগুড়ার এক পার্টি আমার একাউন্টে ভুল করে টাকাটি দিয়েছিল। পরবর্তীতে আমি তাদের টাকা ফেরত দেই। কিন্তু টাকা প্রদানকারী ব্যক্তির কোন নির্দিষ্ট প্রমাণ রাখেননি।

ছিনতাই হওয়া সোনা উদ্ধারের বিষয়ে বসাক জুয়েলার্স এর স্বত্বাধিকারী মনা বলেন, আমার ছোট ভাই ধনঞ্জয় ১৫/২০ দিন আগে পোড়াদহ বাজারের বিশ্বাস জুয়েলার্স’র মালিক হোসেন’র থেকে ৫ ভরি সোনা কিনেছিলে। সেটা যে ছিনতাই করা সোনা এটা আমরা বুঝবো কিভাবে। একজন জুয়েলার্স মালিক এসে বিক্রি করেছে, আমরা কিনেছিলাম। ডিবি পুলিশের কাছে আমরা সেই পরিমাণ সোনা বুঝিয়ে দিয়েছি। আপনাদের আরো কিছু জানার থাকলে জুয়েলার্স মালিক সমিতির সাথে কথা বলেন।

অন্যদিকে জুয়েলার্স সমিতির এক নেতা গোপনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কুষ্টিয়া সোনাপট্টির বসাক জুয়েলার্স ২০ ভড়ি ও আরো ২টি জুয়েলার্স ৪০ ভড়ি সোনা কিনেছিল।

তবে এই অভিযানের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেনি আভিযানিক দলটি। তারা জানিয়েছেন, পরবর্তীতে তাদের মিডিয়া উইং থেকে বিষয়টি জানানো হবে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত বিষয়টি নিয়ে কিছু জানানো সম্ভব হচ্ছে না।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা অভিযানের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ