নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি কর্তৃক শিক্ষার্থীদের ভুলপথে পরিচালিত করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করার পাশাপাশি দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক, সেন্ট্রাল ল’ কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদের বর্তমান সভাপতি কাজী মামুনুর রহমান (মাহিম) এবং বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ও বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সানজিদা জাহান।
সোমবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক রকিবুল ইসলাম (রকিব) সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মহান স্বাধীনতা। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন বলেই আজ আমরা স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করছি। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া আমাদেও সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী কুচক্রী মহল কোটা ব্যবস্থা নিয়ে অপপ্রচার রটিয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করার পাশাপাশি জনগণের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টার বিষয়টি বঙ্গবন্ধু ল’ স্টুডেন্টস’ কাউন্সিল (বিএলএসসি)-এর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই ঘটনায় সারা দেশের আইন শিক্ষার্থীদের একমাত্র ছাত্র সংগঠন বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকারি চাকুরীতে কোটার বিষয়টি দেশের উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। উচ্চ আদালতে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে আন্দোলন করা দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার শামিল। স্বাধীনতার মহান আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে উন্নত জাতি গঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলিষ্ঠ ও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে দেশবাসী এটাই প্রত্যাশা করে। দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মুখ থেকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী কুৎসিত স্লোগান উচ্চারিত হওয়ার বিষয়টি কোনভাবেই কাম্য নয়।
লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে রাজাকারের কোন স্থান নেই। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রেক্ষাপটে রাজাকার শব্দটি সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্য বিধায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের মুখে ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান শুনে আশংকা হচ্ছে যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাধীনতা বিরোধী বিভিন্ন অপশক্তির অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা গেছে যে, সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে দেশবিরোধী চক্র দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বিভিন্ন ধরণের কুৎসিত স্লোগান দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করছে। একইসাথে তারা দেশব্যাপী সড়ক-মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মানুষের স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাঁধা প্রদানের মাধ্যমে দেশের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এই ঘটনা সারাদেশের প্রকৌশলীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদের বর্তমান সভাপতি কাজী মামুনুর রহমান (মাহিম) এবং বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সানজিদা জাহান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দেশ বিরোধী স্লোগান দিয়ে দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান ও দেশের জনগণের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হলে দেশের আইন শিক্ষার্থীরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবেলা করতে বদ্ধপরিকর। একইসাথে আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে শিক্ষাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সকল শিক্ষার্থীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ আশা করে, অচিরেই উদ্ভুত পরিস্থিতির অবসান ঘটবে।