
যায়যায় কাল প্রতিবেদক: কোরবানির ঈদের আগে আগে বাজারে মশলার দাম অস্বাভাবিক হারে চড়ছে। মাংসে বেশি ব্যবহার হয় এমন কিছু মসলার দাম এক মাসে ৫০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি বেড়ে গেছে। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক মাসের তুলনায় এলাচের দাম বেড়েছে কেজিতে অন্তত ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা। দুই হাজার টাকার এলাচের দাম এখন ৩ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। ১০ থেকে ১২ দিনের ব্যবধানে জিরার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা। বর্তমান বাজারদর কারওয়ানবাজারেই ৮০০ টাকা।
মশলা বিক্রেতা শাকিল আহমেদ বলেন, কোরবানির আগে চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়িয়ে দেয় বড় বড় ব্যবসায়ীরা। আগে কিনে এগুলো স্টোরে রেখে দেয়। ঠিক এই সময়টাতে দাম বাড়ায়।
আদার দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। কারওয়ান বাজারে চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা দরে, থাইল্যান্ডের আদা ৩২০ টাকা, বার্মার আদা ২৩০ টাকা ও ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহের তুলনায় ক্রেতাদের ১০ টাকা বেশিতে রসুন কিনতে হচ্ছে। কারওয়ানবাজারেই দর ২২০ টাকা। আদা-রসুনের খুচরা বিক্রেতা মো. সোহাগ আলম বলেন, তিন থেকে চার দিন ধরে দাম বাড়ছে আদার।
কাঁচা মরিচের দাম শুক্রবার ২০০ টাকা ছুঁয়ে সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় নেমে এলেও তিন দিনের ব্যবধানে আবার ২০০ টাকায় চড়েছে। কাঁচা মরিচের সঙ্গে দাম বেড়েছে শুকনা মরিচেরও। ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা বেড়ে এখন ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হলুদের দামও কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি দরে।
কারওয়ান বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি পাল্লা ২৪০ টাকা দরে। যা কেজি প্রতি পড়ে ৪৮ টাকা করে। তবে শান্তিনগর বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা প্রতি কেজি। কারওয়ানবাজারের বিক্রেতা এরশাদ হোসেনকে এই তথ্য জানালে তিনি বলেন, খুচরায় বেশিতে বিক্রি করে এটা সত্য। তারা লাভ বেশি করে করতে চায়।
সপ্তাহ খানেক আগে ফরিদপুরের পেঁয়াজ খুচরায় ৬৫ টাকা থেকে ৬৭ টাকা কেজি ছিল। এবার ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়ে ৭২ থেকে ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। বাজারে বেশিরভাগ সবজিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকার ভেতরে। সপ্তাহ খানেক আগেও যে সবজির দর ছিল ৮০ টাকা কেজি, তাও নেমে এসেছে।
দুই সপ্তাহ আগে কাঁচা পেঁপের দাম শতকের ঘর ছোঁয়ার পর সমালোচনা হয়েছিল। গত সপ্তাহে তা নেমে আসে ৬০ টাকায়। সেই সবজিও কারওয়ান বাজারে খুচরায় ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া করলা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, লাউ, পটল ও দেশি এবং শসা ডেকে ডেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা হালি প্রতি।
৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে বেগুন, টমেটো ও বরবটি। এসব পণ্য পরিমাণে বেশি কিনলে আরও কম দামে মেলে। কারওয়ান বাজারে সবজি বিক্রেতা সাব্বির আহমেদ বলেন, দাম কম, তবুও ক্রেতা নাই। ক্ষেতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি আছে। আকারে একটু ছোট তবে ২০ টাকা প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি ও ফুলকপি। বিক্রেতা আফাজ উদ্দিন বলেন, “চাহিদা খুব বেশি নাই।
কারওয়ান বাজারে খুচরায় ২০ টাকা কেজি দরে চিচিঙ্গা বিক্রি করতে দেখা গেছে মো. বাদশা মিয়াকে। তিনি বলেন, এখন চাহিদার চেয়ে বাজারে মাল বেশি। ক্ষেতে উৎপাদন বেশি হইছে মালের। এগুলো পাইকারিতে তো কিনলে আরও অনেক কমে পাইব মানুষ। পাইকারিতে চিচিঙ্গা ১৫ টাকা কেজি।