উত্তম দাস, খুলনা: খুলনায় ডিজিটাল উন্নয়ন বিষয়ে নাগরিক সমাজ, এনজিওতে কর্মরত উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রধানদের সমন্বয়ে গত বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী একটি উচ্চ পর্যায়ের Deep Dive অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত Deep Dive এর মাধ্যমে ডিজিটাল উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলো তাদের চলমান কার্যক্রমের সাথে ডিজিটাল উন্নয়ন বিষয়ক ইস্যুগুলো সমন্বিত করার কর্ম-কৌশল প্রণয়নে সক্ষম করার জন্যই এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। Deep Dive আয়োজনে সহায়তা করছে কোস্ট ফাউন্ডেশন। খুলনায় Deep Dive আয়োজনে সহযোগি সংগঠন হিসেবে সামগ্রিক সহায়তা প্রদান করেছে রূপান্তর।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রূপান্তর এর নির্বাহী পরিচালক, স্বপন কুমার গুহ এবং সেশনগুলো সঞ্চালনা করেন। বিভিন্ন সেশনের শুরুতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন বিএনএনআরসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান। প্রতি সেশনে ৪জন প্যানেল আলোচক অংশগ্রহণ করেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন মোট ২৫জন অংশগ্রহণকারী তাদের মতামত প্রদান করেন।
আনোয়ারুল কাদির, নির্বাহী পরিচালক, সুন্দরবন একাডেমী, উত্তম কুমার দাস, প্রতিষ্ঠাতা ধ্রুব, মাসুম বিল্লাহ, নির্বাহী পরিচালক, সিয়াম, মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী পরিচালক নবলোক, এস এম ইকবাল তুহিন, মেম্বার সেক্রেটারি, নাগরিক ফোরাম, মাধব চন্দ্র দত্ত, নির্বাহী পরিচালক, স্বদেশ, শরীফা খাতুন, পরিচালক, ওয়েলফেয়ার এফোর্টস, মেঘনা খাতুন, নির্বাহী পরিচালক, পেন ফাউন্ডেশন, কাজী হাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক, স্বাবলম্বী, অজন্তা দাশ, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, খুলনা, জগন্নাথ কর্মকার, হিউমিনিটি ওয়াচ, কোহিনুর আক্তার, নড়াইল নারী উন্নয়ন সংস্থা, মেতাহারুল ইসলাম, রাইটস যশোর, শাহজাহান নান্নু, আফনান যশোর, সাবেকুন নাহার, উন্নয়ন, মো. কামরুজ্জামান, এশ বাংলাদেশ, গোলাম মোস্তফা, অগ্রগতি সংস্থা, শিকদার মঞ্জুরুল রহমান, সিকদার ফাউন্ডেশন ও এস এম এ ওয়াহাব জেজেএস, খুলনা।
ডিজিটাল ডেভেলপমেন্টের চারটি পিলার নিয়ে আলোচনা করা হয়, তাছাড়াও ডিজিটাল একাসিস্টেম, ডিজিটাল ডেভেলপমেন্টের ৯টি নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করা হয়। মিসইনফরমেশন, ডিজইনফরমেশন ও হেট স্পীচ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এরপর আলোচনা করা হয় ডিজিটাল লোকালাইজেশন নিয়েও আলোচনা করা হয়। বিশ্ব যোগাযোগ ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমানভাবে ডিজিটাল রূপান্তর এখন অবিচ্ছেদ্য অংশ। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ডিজিটাল রূপান্তর সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং সাংস্কৃতিক শাসন ব্যবস্থায় এনেছে ব্যাপক পরিবর্তন।
উন্নত দেশগুলো অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ডিজিটাল রূপান্তরের সুফলগুলো ব্যবহার করে উন্নততর সমাজ, উচ্চতর অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা এবং সরকারি খাতে সু-কর্মকাণ্ড অর্জন করেছে। অন্যদিকে আমাদের মতো দেশগুলোতে ডিজিটাল রূপান্তরে ধীরগতির কারণে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল বহুলাংশে দৃশ্যমান হচ্ছে না। ফলে বর্তমান বিশ্বে ডিজিটাল রূপান্তরকে কেন্দ্র করে একটি বিভাজন কাজ করছে।
বিশ^ব্যাপী নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রমগুলো ডিজিটাল উন্নয়নের সাথে সমন্বিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছে। বাংলাদেশে সামগ্রিকভাবে নাগরিক সংগঠনগুলো ডিজিটাল রূপান্তর প্রক্রিয়ায় ব্যাপকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। ডিজিটাল রূপান্তর প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল উন্নয়ন ব্যাপকভাবে আলোচিত বিষয়। ডিজিটাল রূপান্তর ব্যাপকভাবে উন্নয়ন, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।
ডিজিটাল উন্নয়নের ৪টি আন্তঃসংযুক্ত উদ্দেশ্য রয়েছে। উদ্দেশ্যগুলো হলো ডিজিটাল রূপান্তর, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, ডিজিটাল দায়িত্ব: একটি নিরাপদ, সুরক্ষিত ডিজিটাল পরিবেশ রক্ষার জন্য সকল নাগরিকের দায়িত্বশীল আচরণ করা। ডিজিটাল স্থায়িত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত বিষয়াবলীর প্রতি লক্ষ্য রেখে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।
বাংলাদেশে নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলো ডিজিটাল রূপান্তর প্রক্রিয়ায় নিম্নোক্ত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করছে- সেগুলো ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ক জাতীয় আলোচনা এবং প্রক্রিয়ায় নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণ, জাতীয় এবং নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলো ডিজিটাল ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ক আলোচনা এবং প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত নয়। ফলে ডিজিটাল রূপান্তর প্রক্রিয়ায় নাগরিক সমাজের কণ্ঠস্বর সীমিত। ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ক জ্ঞান এবং দক্ষতার ঘাটতি, নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলোর ডিজিটাল রূপান্তর প্রক্রিয়া এবং ফলাফল বিষয়ে জ্ঞান এবং দক্ষতার ঘাটতি পরিলক্ষিত আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ফোরামসমূহে নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলোর অনুপস্থিতি বিরাজমান, নাগরিক সমাজ সংগঠনগুলোর আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ফোরাম এবং প্রক্রিয়ায় উপস্থিতি দৃশ্যমান নয়।
ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট ইস্যু: সংস্থার কার্যক্রমের সাথে ডিজিটাল উন্নয়ন বিষয়ক ইস্যুগুলোকে সমন্বিত না করা। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ডিজিটাল উন্নয়ন বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী কৌশলপত্র প্রকাশ করেছে। এছাড়া জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট।
বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি) এর কর্মপ্রচেষ্টা হলো গণমাধ্যমের দ্রুত পরিবর্তনশীল বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ-সুবিধাসমূহ বিবেচনায় রেখে গণমাধ্যমের জ্ঞানভিত্তিক ও চলমান ইস্যু উভয় বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের উন্নয়ন। বিএনএনআরসি নলেজ-ড্রাইভেন মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট-এর ভূমিকায় আঞ্চলিক, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করে থাকে। এটি জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি ও জাতিসংঘের ইকোনোমিক এন্ড সোশ্যাল কাউন্সিল-এর বিশেষ পরামর্শক মর্যাদাপ্রাপ্ত সংস্থা এবং জাতিসংঘের ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার-২০১৬, ২০১৭, ২০১৯, ২০২০,২০২১ এবং ২০২৩-এর বিজয়ী এবং চ্যাম্পিয়ন।