বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গাইবান্ধায় ‘কয়েন বদল পার্টির’ সদস্য মনজু মিয়া শ্রমিক থেকে কোটিপতি

নুরুল ইসলাম, গাইবান্ধা: গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাপুর গ্রামে কয়েন বদল পার্টির আবির্ভাব ঘটেছে। কয়েন বদল পার্টির সক্রিয় সদস্য মনজু মিয়া মাত্র ৫/৭ বছরের ব্যবধানে দিনমজুর থেকে কোটিপতি হওয়ার অভিযোগ এলাকাবাসীর।

জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাপুর গ্রামে কৃষি কাজ এবং দিন মজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেনক আব্দুল মজিদ। ২০ বছর আগে ৪ পুত্র সন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুর সময় বাড়ি ভিটার জন্য মাত্র ১৩ শতাংশ জমি রেখে যান। দিন এনে দিন খাওয়া অভাবের এই সংসারে হাল ধরেন তার স্ত্রী। তিনি মানুষের জমিতে দিন মজুরি ও বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে ৪ পুত্রকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। অভাবের কারণে ৪ পুত্রের কেউ লেখা-পড়া করতে পারেনি। আব্দুল মজিদের এই ৪ পুত্রের মধ্যে জাহাঙ্গীর মানুষের বাড়িতে এখনও দিনমজুরের কাজ করেন। রেজাউল বাড়ি ভিটায় পাওয়া তার ভাগের ৩ শতাংশ জমি বিক্রি করে তুলশিঘাট এলাকায় শ্বশুড় বাড়িতে চলে গেছেন। সেখানেই তিনি দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু আরেক ভাই মনজু মিয়া ৫/৭ বছর আগেও অভাবের তাড়নায় দিন মজুরের কাজ ও মানুষের কাছে হাত পেতে চেয়ে খেয়েছিল।

সূত্র জানায়, এই মনজু মিয়া বর্তমানে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মালিক। কীভাবে এত টাকা আয় করা সম্ভব?

নির্ভরশীল সূত্র জানায়, এই মনজু মিয়া সাদুল্যাপুরের জামালপুর ইউনিয়নের বহুল পরিচিত কয়েন বদল পার্টির সক্রিয় সদস্য। ইতোমধ্যে তিনি দুইটি বিয়ে করেছেন। প্রথম বউ পশ্চিম দুর্গাপুরে এবং আরেক বউ সাদুল্যাপুরের দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গায় শ্বশুর বাড়িতে থাকেন।

পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানায়, মনজু মিয়া মাত্র ৫/৭ বছর আগেও মানুষের কাছে হাত পেতে খেয়েছে। অথচ এই বছরের শুরুতেই এলাকার জাহেদুল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৩ ও ৭ শতাংশ করে দু’দফায় ২০ শতাংশ জমি, আব্দুল মাজেদ ও আমিনুল মেম্বারের কাছ থেকে দেড় বছর আগে ৩৫ শতাংশ জমি ও মাত্র ১ মাস আগে আমিনুল মেম্বার ও মাজেদের কাছ থেকে একবারেই তিন বিঘা জমি কিনে নেন। বাড়িতে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে করেছেন গরুর খামার। সেই খামারে রয়েছে ৮/১০ টা গরু। তিনি এলাকায় আরো ১০/১২ বিঘা জমি কমপক্ষে ২৫/৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে বন্ধক নিয়েছেন।

এছাড়াও পশ্চিম দুর্গাপুরের নিজ বাড়িতে ও সাদুল্যাপুর উপজেলার জামুডাঙ্গায় তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়ি এলাকায় জমি কিনে কোটি টাকা খরচ করে দুই স্থানেই বিলাস বহুল বাড়ি তৈরি করেছেন। দুই বাড়িতে আসবাবপত্র, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে এলাকার লোকজন ধারণা করছেন।

এ ব্যাপারে মনজু মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে এ তার মতামত জানার জন্য বেশ কয়েক দফা ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

এলাকার একটি সূত্র জানায়, মনজু মিয়া দিনের বেলায় পশ্চিম দুর্গাপুরের বাড়িতে থাকেন না। তবে প্রায় প্রায় তাকে রাতে বাড়িতে দেখা যায়। তার সাদুল্যাপুরের ওই বাড়িতেও তিনি নাকি দিনের বেলায় গা ঢাকা দিয়ে থাকেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ