রিফাত হোসেন মেশকাত, আক্কেলপুর(জয়পুরহাট): জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ছয় কর্মকর্তা মিলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা আক্কেলপুর এরিয়া অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে।
টাকা পেতে এবং বিচারের দাবিতে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা। তাদের অভিযোগ প্রতারণার মাধ্যমে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর আক্কেলপুর এরিয়া অফিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তাজমা খাতুন, ফিল্ড কর্মী তাওয়াবুর রহমান (তাজমা খাতুনের ভাই), ইউনিট ম্যানেজার কামরুজ্জামান (তাজমা খাতুনের স্বামী), এরিয়া ম্যানেজার শ্যামলী খাতুন, জয়পুরহাট এরিয়া ম্যানেজার এইচ এম ইজাদ ও বগুড়া রিজিওনাল অফিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলমগীর হোসেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় ভুক্তভোগী গ্রাহক ও তাদের নিকট আত্মীয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে টাকা ফেরত পেতে মানববন্ধন করেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর আক্কেলপুর এরিয়া অফিসের সামনে গিয়ে আবারও মানববন্ধন করেন। এসময় ভুক্তভোগীরা দাবী করেন, তাদের প্রায় ১৭ জন গ্রাহকের নিকট থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
একই সাথে তারা এ ঘটনায় জড়িত প্রতারকদের বিচার ও দ্রুত নায্য টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য দাবি জানান।
তারা জানান, এ বিষয়ে ওই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলে টাকা ফেরৎ না দিয়ে প্রায় ১ বছর থেকে বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করে। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের মধ্যে নারী গ্রাহকদের সংখ্যাই বেশি।
ইদ্রিস আলী নামের এক ভোক্তভোগী গ্রাহক বলেন, আমিসহ আরও ১৭ জন গ্রাহকের সাথে মিথ্যা কথা বলে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে। লভ্যাংশ দেওয়ার নাম করে আমার নিকট থেকে ৩২ লাখ টাকা নিয়েছিল তারা। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করলে ১৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ফেরৎ পেয়েছি। বাকি টাকা তারা ফেরৎ না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করছে। আমি আমার বাকি টাকা ফেরৎ চাই।
এসকল বিষয়ে কথা বলার জন্য ওই ইন্স্যুরেন্স অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। সেখানে কোনো কর্মকর্তা নেই।
অভিযুক্ত আক্কেলপুর এরিয়া অফিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তাজমা খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, যারা আমাদের বিষয়ে অভিযোগ করছে তারা সবাই আমাদেরই কর্মী। মেয়াদ পূর্ণ না হওয়ায় তাদের টাকা ফেরৎ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। স্যার বগুড়া অফিসে যাওয়ায় আমাদের অফিস বন্ধ আছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলম বলেন, এ বিষয়ে গ্রাহকরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আগামী সপ্তাহে উভয় পক্ষকে ডেকেছি। সেখানে বিষয়টি সুরাহা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।