
মো.শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে সীতাকুন্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর ১০ নং ওয়ার্ডের ৭ নং সমাজ, দরবেশ নগর, লোকমানের ফকিরের খামারবাড়ি সংলগ্ন জাফরাবাদে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই এলাকার নিরীহ মো. ওসমান গনির উপর চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে জোরালোভাবে কোপ দেয়। ওসমান গনিকে গুরুতর আহত করে, রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত নিশ্চিত মনে করে, রাস্তার পাশে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে রাসেল বাহিনীর অস্ত্রধারী ১০/১২ জন সন্ত্রাসী দ্রুত পালিয়ে যায়।
তাৎক্ষণিক ওসমান গনির পরিবার ও এলাকার সচেতন নাগরিকরা ঘটনার খবর পেয়ে, রক্তাক্ত অবস্থায় আহত ওসমান গনিকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান । চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের জরুরী বিভাগ থেকে প্রথমে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি করার নির্দেশ দেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। পরবর্তীতে মাথায় গুরুতর জখম হওয়ায় আহত ওসমানকে ২৮ নাম্বার ওয়ার্ডে রেফার করে মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক । বর্তমানে ওসমান গনি চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আহত ওসমান ও তার অসহায় পরিবারের প্রতি দেখার যেন কেউ নেই।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, গত ২২/১১/২০২২ সন্ধ্যা আনুমানিক ৭.৩০ ঘটিকার সময় প্রতিদিনের ন্যায় বায়েজিদ বোস্তামীর বি এস আর এম ফ্যাক্টরি থেকে কাজ শেষ করে, নিজের বসবাসরত জঙ্গল সলিমপুরের কালাপানিয়ায় নিজ বাড়িতে, পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার নিয়ে, ফেরার সময় রাস্তায় অতর্কিত হামলাটি করে সন্ত্রাসীরা। আহত ওসমানের কাছে থাকা নগদ টাকাসহ বাজারের ব্যাগ ও মাথায় থাকা আঁটার বস্তা ছিনিয়ে নেয় রাসেল বাহিনী এবং পরবর্তীতে আহত ওসমানের মৃত নিশ্চিত মনে করে, রাসেল বাহিনীর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
গত ২৬/১১/২০২২ তারিখে আহত ওসমানের ছেলে মো. রিয়াদ হোসেন বাদী হয়ে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ৯ জনকে আসামি করে, আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি হিসেবে অভিযোগে লিপিবদ্ধ করা হয়। সীতাকুণ্ড থানার অভিযোগ পত্রে আসামিরা হলেন, (১)মো.রাসেল প্রকাশ ভূমিদস্যু রাসেল, (২) শামসুর প্রকাশ কিশোর গ্যাং লিডার সামসু,(৩) মো. আরিফ প্রকাশ পেট কাটা আরিফ,(৪) সেকান্দর প্রকাশ সন্ত্রাসী সেকান্দর, (৫)শাহাদাত হোসেন প্রকাশ সন্ত্রাসী শাহাদাত,(৬) আব্দুল মজিদ প্রকাশ ইয়াবা মজিদ,(৭) আব্দুল শুক্কুর প্রকাশ গাঁজা শুক্কুর,(৮) মো. সোহাগ প্রকাশ কিশোর গ্যাং লিডার সোহাগ, (৯)আব্দুল মজিদ প্রকাশ চোরাকারবারি মজিদ। উপরে উল্লেখিত প্রায় আসামীদের নামে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে, অভিযোগের বাদী আহত ওসমান গনির ছেলে মো. রিয়াদ হোসেন দৈনিক যায়যায় কালকে বলেন, দরবেশ নগরের লোকমান ফকিরের ছেলে মো.রাসেল গ্যাং সব সময় আমাদের অসহায় পরিবারের উপর জুলুম নির্যাতন করে আসছে। তারা চায় না আমরা এলাকায় বসবাস করি। কিছুদিন আগেও রাসেল বাহিনী আমার মায়ের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারাত্মক আঘাত করেছিল। আমার মাকেও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের রেখে চিকিৎসা করিয়েছিলাম। কিন্তু, রাসেল বাহিনীর ভয়ে মামলা করার সাহস পাচ্ছিলাম না। প্রতিদিনের ন্যায় আমার বাবা চাকরি শেষ করে যখন বাজার নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন ঠিক সেই মুহূর্তে রাসেল বাহিনী আমার বাবাকে প্রানে মেরে ফেলার জন্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে মাথায় জহম করে। মৃত নিশ্চিত মনে করে, বাবাকে রাস্তার পাশে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে, রাসেল বাহিনী দ্রুত পালিয়ে যায়। রাসেল বাহিনী সব সময় আমাদের অসহায় পরিবারের উপর বারবার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমার বাবা-মাকে মেরে ফেলার জন্য রাসেল বাহিনী বারবার চেষ্টা করছে। তাই আর কোন উপায় বুদ্ধি না পেয়ে আইনের সহযোগিতা পাওয়ার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হই। প্রশাসনের নিকট আমার বিনীতভাবে অনুরোধ, এ ঘটনার সাথে জড়িত সকল অপরাধীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে, আইনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, আইন সবার জন্য সমান । আহত ওসমানের উপর হামলাকারীদেরকে সঠিক তদন্তের মধ্য দিয়ে চিহ্নিত করে, দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে এবং এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমার থানার উপ-পরিদর্শক মো. মোতাহার হোসেনকে।