সোমবার, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রামে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী নিহত

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নেওয়ার সময় চট্টগ্রামে আদালত এলাকার অদূরে সংঘর্ষ চলাকালে আহত হয়ে এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও আদালতের প্রবেশ সড়কে ‘হামলার শিকার’ হয়ে নিহত হন সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নামের ওই আইনজীবী।

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, আদালত থেকে বাসায় ফেরার পথে সড়কে আইনজীবী সাইফুলের ওপর হামলা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

তার দাবি, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ওই আইনজীবীকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় আরও ২০ জন আইনজীবী আহত হয়েছেন।

সাইফুল চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, আদালত ভবন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় সাতজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাইফুলকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে এবং বাকি ছয়জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, “হাসাপাতাল থেকে আমাদের পাওয়া তথ্যে জেনেছি নিহত ব্যক্তিকে লালদিঘী এলাকা থেকে আনা হয়েছে।“

নিহত সাইফুলের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিতে।

ঢাকায় গ্রেপ্তার চিন্ময় দাশকে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মহানগর আদালত হাজির করা হয়।

তাকে কড়া নিরাপত্তায় এদিন আদালতে আনার পর থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন জড়ো হতে থাকেন। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। বিভিন্ন স্লোগানে তারা বিক্ষোভ করতে শুরু করেন।

সোয়া ১২টার দিকে চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে পুলিশ-বিজিবি-এপিবিএন সদস্যদের পাহারায় আদালত ভবন থেকে নামিয়ে নিচে রাখা প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

এসময় প্রিজন ভ্যান ঘিরে সনাতন সম্প্রদায়ের বিক্ষুব্ধ লোকজন বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে সাধারণ লোকজনের পাশাপাশি সাধু সন্তুদেরও দেখা যায়।

এর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর আদালত প্রাঙ্গণে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের এই মুখপাত্রকে কারাগারে নিতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেলা পৌনে ৩টার দিকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

এরপর আদালত চত্বর থেকে বিক্ষোভকারীরা এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত ভবন থেকে নেমে যাওয়ার সময় সড়কের দুই পাশে রাখা মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং আইনজীবীদের ভবনের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

পরে আদালত থেকে নেমে যাওয়ার সড়কে মুসলিম হাই স্কুলের সামনে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। আইনজীবী, কর্মচারি ও দোকানদাররা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে।

তারা আদালতের সড়কের বিপরীতে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের হরিজন পাড়ার দিকে ধাওয়া দেয়। থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুটা সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন আহত অবস্থায় কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ