গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া ও বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম আদালতের সরকারী আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে চট্টগ্রামের টাইগারপাস মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এই ইসকন গত ১৬ বছর ধরে বেড়ে উঠে আজ জঙ্গি সংগঠন হিসেবে স্বৈরাচারের সঙ্গী হয়ে ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হোক, আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেবো।’
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে বুধবার দুপুরে নগরের টাইগার পাস মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট দাঁড়িওয়ালা-টুপিওয়ালারা হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিয়েছে। তবুও উগ্র হিন্দুত্ববাদী জঙ্গি সংগঠন সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইকে হত্যা করেছে। এ দেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। যে হিন্দু সে হিন্দু ধর্ম পালন করবে। যে বৌদ্ধ সে বৌদ্ধ ধর্ম পালন করবে। যে খ্রিস্টান সে খ্রিস্টান ধর্ম পালন করবে। আমরা সবার অধিকার রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করবে, সেসব উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে কোনও জায়গা দেওয়া হবে না।’ তিনি বলেন, ‘ইসকন জঙ্গি সংগঠন। এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এ সংগঠন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সঙ্গী। আমরা কিছুতেই ফ্যাসিবাদকে সহ্য করবো না।’
নাগরিক কমিটির সদস্য ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, ‘যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ এসেছেন, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই চিন্ময়রা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে খুনি হাসিনারা উসকানি দেন। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে জঙ্গি ইসকনরা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ভারতের কিছু প্রেতাত্মা উসকানি দেয়। আমরা স্পষ্ট করে প্রেতাত্মাদের বলে দিতে চাই, আমরা ১৬ বছরের খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি এবং ছোটখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা আমাদের জন্য হাতের ময়লা।’
সারজিস আলম বলেন, ‘বীর চট্টলাবাসী আপনাদের বলে দিতে চাই, আমাদের চারপাশে অনেক চক্রান্ত ছিল; আরও চক্রান্ত হবে, কিন্তু আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সব চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।’
চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এই বাংলাদেশে কোনও উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের ঠাঁই হবে না, কেউ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। এই বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা ১৫ দিনের মধ্যে ইসকনকে নিষিদ্ধকরণ চাই। আইনজীবী সাইফুল হত্যায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাক মাহমুদ রাফি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে একতাবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু যদি কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদিতা পরিচালনা করে, যদি কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে তাহলে আমরা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা তাদের প্রতিহত করতে একবারও ভাববো না।