মীর আমান মিয়া লুমান, স্টাফ রিপোর্টার: সুনামগঞ্জের ছাতকে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত শনিবাব সকালে ছাতক প্রেসক্লাবের রোকেয়া ম্যানশনস্থ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছাতক সদর ইউনিয়নের মানসীনগর গ্রামে মৃত রাশিদ আলীর পুত্র রইছ উদ্দিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষি মহল আমি সহ আমার ভাই আলা উদ্দিন ও কফিল উদ্দিন এর বিরুদ্ধে জায়গা-জমি নিয়ে বিব্রতকর তথ্যের মাধ্যমে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন হয়রানীমূলক মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন দপ্তরে আমাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সমাজে আমাদের মান-সম্মানের হানি ঘটাচ্ছে। প্রায় একমাস আগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছাতক বরাবরে একই গ্রামের কামাল উদ্দিন আমাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগে উল্লেখ করা হয় মানসীনগর মৌজার জেএলনং-২১১ স্থিত এসএ ৮১৩ নং-দাগের সরকারী খাস খতিয়ানের ভূমিতে নৌকা যাতায়াত, পানি নিস্কাশন ও গরুর গোপাট হিসেবে ব্যবহৃত ছিল। আমরা উক্ত দাগের উপর জোরপূর্বক খালের উপর নির্মিত ব্রিজের নীচ ভরাট করে পার্শ্বে গাছগাছালি লাগিয়ে ঘরবাড়ি নির্মাণ ও বাউন্ডারী ওয়াল করিয়া নিজ দখলে নিতে চাচ্ছি এবং বাড়ির উত্তর পাশের বাউন্ডারী ওয়াল সরকারি সড়কের ২ ফুটের মধ্যে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের করেছি বকে অভিযোগ দায়ের করে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রনোদীত।
মূলত এই সরকারি খতিয়ান ভূক্ত এ গোপাট রকম ভূমিতে আনুমানিক ২৬-২৭ বছর আগে গরু চলাচলের গোপাট হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু সরকারের বরাদ্দের মাধ্যমে আনুমানিক ২০ বছর আগে এখানে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। যা এই রাস্তটি প্রতিপক্ষ ব্যবহার করে আসছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু নাসের ঘটনাস্থলে সার্ভেয়ার দিয়ে বিরোধকৃত জমি পরিমাপ করে কাগজপত্র ও সরজমিনে তদন্ত করে বাস্তবে অভিযোগের সত্যতা পান নি। এই তদন্তে বাদী পক্ষ কামাল উদ্দিন সন্তুষ্ট না হওয়ায় এসিল্যান্ডের সাথে অশোভনমূলক আচরণ করে তার গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, গত ২০০২ সালে একই গ্রামের মৃত গোলাম হাফিজের পুত্র মো. ফয়জুল হক, আজমান আলীর পুত্র মো. ফজল উদ্দিন অনুরুপ অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতেগত ২০০২ সালের ১১ মার্চ মানসীনগর গ্রামে হাফিজ মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সাবেক চেয়ারম্যান সাহজুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, জুবেদ আলী সহ ২৩ জন জনপ্রতিনিধিগণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে শালিস বৈঠক অনষ্টিত হয়। বৈঠকে মো. ফয়জুল হক গং তাদের দাবীকৃত দেড় শতক ভূমির পক্ষে কাগজপত্র বা দলিল প্রদর্শনে ব্যর্থ হয় এবং আমরা আমাদের পক্ষে ৪টি দলিল পেশ করি।
এই সময় সালিশ বোর্ডের কাছে ফজল উদ্দিন তার চলাচলের অসুবিধা জানিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য শালিস বোর্ডকে অনুরোধ করলে অবস্থা বিবেচনায় রইছ উদ্দিনের পুরাতন বাড়ির দক্ষিণ পাশে রাস্তা দিয়ে ফজল উদ্দিনকে চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়। প্রয়োজনে ফজল উদ্দিনের বাড়ি দিয়ে অপর পক্ষ চলাচল করবে ইহাতে উভয় পক্ষ চলাচলে কোন প্রকার বাঁধা প্রদান করিতে পারিবেনা মর্মে এই সালিশ বৈঠক থেকে ২০০২ সালের ২০ মার্চ সমরোজ আলীকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন করে সালিশ বোর্ডের সদস্যগণ বিরোধ মিমাংসার জন্য বিরোধিও ভূমি সরজমিন তদন্ত করে উভয় পক্ষকে মিলিয়ে দিয়ে বোর্ডের তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্ত করেন।
পরবর্তীতে আবারও আমাদের বিরুদ্ধে রাস্তা দখলের অভিযোগে এনে আমল গ্রহণকারী প্রথম শ্রেণির হাকিম ছাতক সুনামগঞ্জ আদালতে (বিবিধ মোকদ্দমা নং-৬৬/২০০২) দায়ের করে। মামলার প্রেক্ষিতে ২০০৪ সালের ২০ ডিসেম্বর তৎকালিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছাতক মো. বদরুল হক সরজমিন তদন্তপূর্বক অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে অভিযোগ মিথ্যা বলে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। দাখিলকৃত প্রতিবেদন মাননীয় আদালত পর্যালোচনা করে মামলাটি খারিজ করেন। এই ঘটনার পর থেকে কামাল উদ্দিন গংরা আমাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করে আমাদের স্বপরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে।
উল্লেখ্য যে, মানসীনগর মৌজার বিরোধীয় ভূমির ৮১৩ নং দাগের লগ্ন এসএ ৮০৬ নং দাগে .১৬২৫ একর, এসএ ৮১৪ নং দাগে .২৯ একর, এসএ ৮১৫ নং দাগে .১৩একর, এসএ ৮১৬ নং দাগে .১১একর, এসএ ৮৮০নং দাগে .০৫একর, এসএ ৮৮১ নং দাগে .০৮একর, এসএ ৮৮২ নং দাগে .০৭একর, এসএ ৮৮৩ নং দাগে .১৭ একরসহ পৃথক দলিল মূলে ও মৌরশী স্বত্ত মোট ১.০৬২৫ একর ভূমির মালিক ও দখলদার হই আমরা।