
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতকে বারকি শ্রমিক আবুল হোসেন চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ঘটনার পরকীয়া প্রেমিক সাবুল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৭ জানুয়ারী গভীর রাতে সহকারী পলিশ সুপার (ছাতক সার্কেল) রণজয় চন্দ্র মল্লিক এর নেতৃত্বে এসআই গোলাম ফাত্তাহ মুর্শেদ চৌধুরী ও সঙ্গীয় ফোর্স সিলেটের ওসমানি নগর থানা এলাকায় ষাইদা গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ৬ ডিসেম্বর আবুল হোসেনর স্ত্রী মোছা. সবতুন বেগম ও বুধবার ০৭ ডিসেম্বর আবুল হোসেন এর ভাই আলী হোসেনকে গ্রেফতার করে সুনামগঞ্জ কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, আবুল হোসেনকে হত্যার পর তার ভাই আলী হোসেন, তার স্ত্রী মোছা: সবতুন বেগম ও স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক সাবুল মিয়াসহ কয়েকজন মিলে তার লাশ রোয়া বিলের পাশে একটি বন রকম স্থানে ফেলে রাখা হয়। বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মোছা. সবতুন বেগম।
জানা যায়, উপজেলা ইসলামপুর ইউনিয়নের সৈদাবাদ গ্রামের মৃত. আব্দুল মনাফের ছেলে আবুল হোসেন শুক্রবার ২০২২ সালের ২১ অক্টোবর নিজ বাড়ী থেকে নিখোঁজ হন। পর দিন সকাল ৮ ঘটিকা পর্যন্ত আবুল হোসেন বাড়ীতে ফিরে না আসায় তার স্ত্রী মোছা: সবতুন বেগম ও ভাই আলী হোসেনসহ আত্মীয় স্বজন সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখোঁজি করে আবুল হোসেনকে পাওয়া যায়নি। ২৭ অক্টোবর আবুল হোসেনের ভাই আলী হোসেন থানায় জিডি দায়ের করেন। ২ নভেম্বর মোছা: সবতুন বেগম বাদী হয়ে তার স্বামী মো. আবুল হোসেনকে অপহরণ করে খুন ও লাশ গুম করার অভিযোগ এনে আমল গ্রহনকারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, ছাতক, সুনামগঞ্জে সি আর মামলা দায়ের করেন। এতে একই গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে শুকুর আলী, মন্তাজনগর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মনির উদ্দিন, সফিক উদ্দিনসহ ৬ জন ও অজ্ঞাতমা আরো ৫/৬ জন আসামী করা হয়। ছাতক থানায় মামলা নং-০৪ এফআইআর করা হয়।
এদিকে আবুল হোসেন নিখোঁজ হওয়ার ২৪ দিন পরম ১৫ নভেম্বর স্থানীয় রোয়া বিলের পাশে বন রকম স্থান থেকে একটি কষ্কাল উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ মর্গে প্রেরন করে থানা পুলিশ। অপরদিকে দায়েরী মামলার সকল আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হন। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। ২৩ নভেম্বর স্থানীয় দৈনিক ‘সুনামগঞ্জ প্রতিদিন পত্রিকায় “ছাতকে আবুল হোসেনকে পরিকল্পিত হত্যা নাকি অন্য কারণ ঘটনার আড়ালে থাকা প্রকৃত রহ রহস্য কি?” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে প্রাপ্ত তথ্য উপাথ্যর ভিত্তিতে মামলার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। অবশেষে আবুল হোসেনের স্ত্রী মোছা: সবতুন বেগম, ভাই আলী হোসেনের ও স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক সাবুল মিয়ার মুখোশ উম্মোচন করে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে পরকীয়া প্রেমিক সাবুল মিয়া পলাতক ছিলো। অবশেষে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে ধরা পড়েন পরকীয়া প্রেমিক সাবুল মিয়া।
এ বিষয়ে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাঁন মোহাম্মদ মাইনুল জাকির গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃতকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।