রবিবার, ১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জামায়াত নেতাকে কলিজা টানি ছিড়ি ফেলার হুমকি বিএনপি নেতার

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম: ‘কলিজা টানি ছিড়ি ফেলবো-একবারে টানি ছিড়ি ফেলবো তোমার,চেনো তুমি-এ চেনো! খুব পাওয়ার দেখাও জামায়াতের, একবারে নিশ্চিহ্ন করি দিবো জামায়াত। চেনো বিএনপি!’- জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের এক নেতাকে এভাবে হুমকি দিয়েছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান।

তার হুমকি দেওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ মঙ্গলবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান এভাবে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন,‘রাগের মাথায় ওভাবে বলেছি।

বিষয়টি সমাধান হওয়ার পরও ওই যুবক গোপনে ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। এজন্য জামায়াতের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতেও রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন ওই বিএনপি নেতা। ভুক্ততভোগী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের এক নেতার নাম রুবেল মিয়া। তিনি ফেডারেশনের উপজেলা শাখার বায়তুলমাল সম্পাদক পদে রয়েছেন।

এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। ফেসুবকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপে বিএনপি নেতা আনিছুর রহমানকে কিছু অশ্রাব্য শব্দ ব্যবহার করতে শোনা গেছে। ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়,আমি থানা যায়া ওখানে বসি এজাহার লিখবো,উয়াক (জামায়াত নেতা রুবেল) এ্যারেস্ট করি দিয়া তারপর আমি আসবো।’জানতে চাইলে রুবেল মিয়া বলেন, গত ২১ এপ্রিল উপজেলা ভূমি অফিসে আমাদের দুজন কর্মীকে মারপিঠ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। আমি এর প্রতিবাদে এক স্বৈরাচারের বিদায় হয়েছে,নব্য স্বৈরাচারের সূচনা হওয়ার উপক্রম”এমন একটি লেখা ফেসবুকে পোস্ট দেই। এছাড়াও গতকাল (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় চান্দামারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন নিয়ে অভিভাবক সমাবেশ হয়।
ওই সমাবেশ থেকে স্থানীয় ব্যক্তি অ্যাডভোকেট আহমদ আলী (উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি) ভাইকে সভাপতি করার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু বিএনপির লোকজন উপজেলা থেকে শো-ডাউন করে স্কুলে এসে ওই নাম কেটে দেয়। ওনারা ওনাদের প্রার্থীদের নাম দিয়ে চলে যায়। আমি এর প্রতিবাদ করি। এই দুই ঘটনায় তারা আমাকে বিকালে তুলে নিয়ে থানা মোড়ে একটি মেডিসিনের দোকানে নিয়ে অমন বাজে আচরণ করে। চর থাপ্পর মারে। প্রাণনাশের হুমকি দেয়। জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়।’

রুবেল বলেন,বিষয়টি আমার দলের উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। নিরাপত্তার কথা ভেবে থানায় জিডি করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আহমদ আলী বলেন,অন্য সবার মতো আপনারাও ভিডিওটি দেখেছেন। এটা আরেক ধরণের ফ্যাসিবাদী আচরণ। আমরা বিষয়টি আমাদের নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। থানায় জিডি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ‘বিএনপি নেতা আনিছুরের নেতৃত্বে দখল বাণিজ্য,টেন্ডার বাণিজ্য এবং স্কুল-কলেজগুলোতে কমিটি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এটার নিরসন হওয়া প্রয়োজন-যোগ করেন এই জামায়াত নেতা।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান বলেন,রুবেল মিয়া (ভুক্তভোগী) আমাকে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেয়। এতে আমার সম্মানহানি হয়েছে। বিষয়টির জন্য তাকে ডেকে নিয়ে বলেছি। এসময় রাগের মাথায় ওভাবে বলেছিলাম। কিন্তু সে সেটা গোপনে ভিডিও করেছে তা বুঝিনি। তাকে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে সে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে। পরে তার সাথে ফয়সালা হয়েছে। সবাই একসাথে চা খেয়েছি। কিন্তু সে সেসব ভিডিও না দিয়ে আংশিক ভিডিও ছেড়েছে। এটা ঠিক করেনি। আমাদেরও তো সম্মান আছে।’বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থেকে এভাবে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুর বলেন,রাগে ওভাবে বলেছি। এজন্য প্রয়োজনে জামায়াতের কাছে দুঃখ প্রকাশ করবো।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ