
রকিবুজ্জামান,মাদারীপুর: গতকাল রাত ৯ টা হতে টানা ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ আশেপাশের এলাকা।এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রোগী সহ এলাকাবাসী।এদিকে হাসপাতালে বিকল্প কোন বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের ভোগান্তি আরো বেড়ে গিয়েছে।
জানা যায়,গতকাল শুক্রবার হতে কালকিনিতে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।এর মাঝে রাত ৯ টার দিকে হাসপাতাল এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়।শনিবার দুপুর ৩ টা পর্যন্তও বিদ্যুৎ না আসায় চরম ভোগান্তিতে পরতে হয় রোগীদের। সরকারিভাবে হাসপাতালের জন্য জেনারেটর দেয়া হলেও তেলের দাম বৃদ্ধির পর হতে বন্ধ রয়েছে জেনারেটরের তেল বরাদ্দ।এদিকে দীর্ঘদিন অচল থাকায় জেনারেটরের ব্যাটারীও নষ্ট হয়ে গিয়েছে।তাই রোগীদের সেবা দান স্বাভাবিক রাখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভরসা করতে হয় পল্লী বিদ্যুতের উপর।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় গোটা হাসপাতাল অন্ধকারে নিমজ্জিত। জরুরি বিভাগ থেকে জানা গেল, রাত ৯টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়।এরপর এখনও বিদ্যুৎ না আসায় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী ও রোগীর লোকজনকে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগ, শঙ্কা ও বিড়ম্বনায়।ওয়ার্ডের নার্সরা রোগীর স্বজনদের মুঠোফোনের আলোর সাহায্যে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।
হাসপাতালে ভর্তি একাধিক রোগীর স্বজনেরা বলেন,”অন্ধকারের মধ্যে খুব বিপদে আছি।তাছাড়া কারেন্ট না থাকায় অনেক রোগীকে গ্যাস(নেবুলাইজেশন) দেয়া যাচ্ছে না। কখন বিদ্যুৎ আসবে আল্লাহ্ জানেন।”
এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন,”কোন ঝড় না,বাতাস না সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘন্টার পর ঘন্টা কারেন্ট থাকে না!এতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অসুস্থ লোকগুলো আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।জরুরী চিকিৎসা সেবা যেখানে দেয়া হয় সেসব জায়গায় ঠিকমতো কারেন্ট দেয়ার ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের নজর দেয়া দরকার।”
কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ একেএম শিবলী রহমান আক্ষেপ করে জানান,”বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে বিকল্প কোন বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই।তেলের দামবৃদ্ধির পর হতেই হাসপাতালের জেনারেটরটির তেল বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে।পাশাপাশি অনেক দিন বন্ধ থাকায় ব্যাটারিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে।এখন আমাদের একমাত্র ভরসা পল্লী বিদ্যুৎ।হাসপাতালে সপ্তাহে দুইদিন ওটি থাকে,তখন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে বলতে হয় যেন ওটি চলাকালীন সময় বিদ্যুৎ না যায়।
এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা হাসপাতালে বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিকল্প বিদ্যুৎ লাইনের জন্য বারবার বলার পরও এখন পর্যন্ত কোন সমাধান পাইনি।”
এ ব্যাপারে কালকিনি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম পংকজ সিকদার জানান,”বৃষ্টির কারণে গাছের ডালপালা হেলে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারের উপর পড়ায় কয়েক জায়গায় বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রয়েছে।অফিসের লোকজন লাইন সচল করতে কাজ করছে।তবে টানা বৃষ্টির কারণে স্টাফদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।আমরা দ্রুত লাইনটি সচলের চেষ্টা করছি।”
অসুস্থ রোগীদের কথা ভেবে যেসব এলাকায় হাসপাতাল সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে,সেসব এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা প্রদানের দাবী এলাকাবাসীর।