শনিবার, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঢাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

যায়যায় কাল প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের হাই কোর্ট অভিমুখে পদযাত্রা আটকে দিয়েছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিও হয়েছে।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা দোয়েল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাদের সঙ্গে কার্জন হল থেকে যোগ দেন বিএনপি সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

তারা হাই কোর্টের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিশু অ্যাকাডেমির সামনে তাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়।

ঘটনাস্থল থেকে এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নুসরাত জাহান চৌধুরী এবং প্রভাষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া।

আন্দোলনকারীদের দাবি, পুলিশ শেহরীন আমিনের ‘হাত মুচড়ে দেয়’ এবং ‘ধাক্কা দিয়ে’ মাটিতে ফেলে দেয়। এতে তিনি হাঁটুতে ব্যথা পান।

পরে শেহরীন আমিন সাংবাদিকদের বলেন, “একজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ তুলে নিতে চাইলে আমি বাধা দিই। বললাম- তার অপরাধ কী। তল্লাশি করার থাকলে আপনি আমাদের সামনে করুন। কিন্তু তিনি (পুলিশ সদস্য) কোনো কথা না শুনে বলপ্রয়োগ করেন। আমার হাত মুচড়ে দিয়ে ছেলেটাকে নিয়ে যেতে চায় পুলিশ, আবার ধরতে গেলে ধাক্কা দিলে আমি পড়ে যাই। হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছি, একটু তবে ‘হাত মুচড়ে যাওয়ায়’ বেশি ব্যথা পেয়েছি।”

অপরদিকে মৎস্য ভবনের মোড় থেকে মিছিল নিয়ে আরেক দল শিক্ষার্থী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে দিয়ে কদম ফোয়ারার সামনে পৌঁছালে তারও পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। শিক্ষার্থীরা ফিরে যাওয়ার সময় সেখান থেকে দুজনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

নাহিদ ও আরিফ নামে ওই দুই শিক্ষার্থী নিজেদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্যসেন হলের ছাত্র পরিচয় দেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, হাই কোর্টের মোড়ে দুই শিক্ষার্থীকে গাড়িতে তুললে আইনজীবীরা প্রিজন ভ্যানটি সামনে থেকে ঘিরে ধরেন এবং তারা শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. কামরুজ্জামান পুলিশের সঙ্গে গিয়ে বেলা ২টার দিকে দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “দুজন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। আমাদের বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রমনা জোনের সহকারী কমিশনার ইমরুল সেখানে ছিলেন। তাই আমরা তার সঙ্গে কথা বলেন দুজন শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনি।”

এছাড়া শিশু একাডেমির সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের একটি দল কদম ফোয়ারার দিক থেকে এসে হাই কোর্ট মোড়ের সামনে অবস্থান করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় বিচার দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বেলা ৩টার দিকে তারা কর্মসূচি শেষ করে চলে যান।

মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার দুপুরে ছিল ‘মার্চ ফর জাস্টিস’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল কাদের মঙ্গলবার রাতে অনলাইনে বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ ‘টেলিগ্রামে’ এই কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

ঘোষণায় বলা হয়, “সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম-খুনের প্রতিবাদে এবং জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে, ছাত্রসমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে আগামীকাল বুধবার ‘মার্চ ফর জাস্টিস’কর্মসূচি পালন করা হবে।”

ঘোষণায় দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, পেশাজীবী, শ্রমজীবীসহ সব নাগরিককে তাদের কর্মসূচিতে সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করার অনুরোধ জানানো হয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ