
আবুল হাশেম, রাজশাহী : যখন সারাদেশ ব্যাপী পুলিশের সাবেক আইজিপিসহ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে, ঠিক সে সময়ে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে চলছে আটক বাণিজ্যসহ ফিটিং মামলা দেওয়ার মহোৎসব। তদন্ত কেন্দ্রের আইসি এসআই সোহাইল রানা এমন কাণ্ড করছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
গত ১৯ জুন রাত ১২:১৫ টায় নিষিদ্ধ গাঁজার গাছ উদ্ধার করে আজাদ আলী প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তির নামে মামলা দেওয়া হয়। আজাদ আলী তাহেরপুর পৌরসভার বিষুপাড়া গ্রামের মৃত অফির উদ্দিনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গাঁজার গাছ উদ্ধার হয় অন্য জায়গায়। আর মামলা দেওয়া হয় আজাদ আলীর বিরুদ্ধে। এর আগে আজাদ আলীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিলো না। এলাকাবাসীর কেউ জানে না তিনি মাদক সেবন বা বিক্রি করেন। ভ্যানচালক আজাদ নিজে ভ্যান চালিয়ে তার সংসার পরিচালনা করেন।
ওই মামলার দুই স্বাক্ষী জানায়, আমরা জানি না গাছ কোথায় থেকে পুলিশ নিয়ে এসেছে। সেটা আদৌও গাঁজার গাছ কি না তা নিশ্চিত না। বাড়ি থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে এসে তাদের একটি ১০০ গ্রাম ওজনের খুবই ছোট্ট একটি গাছ দেখায় পুলিশ। পরে জানতে পারি আজাদ আলীকে দুটি গাছ (যার ওজন ১ কেজি ৬০০ গ্রাম) দিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে।
প্রকৃত ঘটনা জানিয়ে এলাকাবাসী বলেন, তাহেরপুর পৌরসভার জগন্নাথপুরে হাবিবুরের পানের বরজ থেকে একটি বড় গাঁজার গাছ উদ্ধার করেন এসআই সোহাইল রানা ও তার টিম। যদিও এসআই সোহাইল রানা ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনাস্থলেই হাবিবুরকে ছেড়ে দেন। ওই গাছ দিয়ে মামলা দেওয়া হয় ভ্যানচালক আজাদ আলীকে। কারণ আজাদ আলীর নিকট এসআই সোহাইল রানা ১০ হাজার টাকা চেয়েছিলো তা তিনি দিতে পারেননি।
অপর আরেক ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল হওয়া বাগমারা থানার তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের মাদক মামলায় দুজনকে সহযোগী আসামি করা হয়। বাগমারা থানার মামলা নং ৪৬/২০২৪। তারা ওই ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত নয়। সহযোগী দুই আসামি হলেন, বাগমারা উপজেলার কামারবাড়ি এলাকার মৃত জব্বার প্রামানিকের ছেলে জহুরুল ইসলাম (২৩) ও বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের গাঙ্গোপাড়া এলাকার বিরাজ প্রামানিকের ছেলে শারুক (২৪)।
সহযোগী মামলার আসামিরা জানায়, আমাদেরকে ওই ঘটনাস্থলের অনেক দূর থেকে ধরে নিয়ে আসেন। এছাড়াও ওই মামলায় আসামি করা হবে মর্মে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই সোহাইল রানা। ৪০ হাজার টাকা দিলেও তাদেরকে ওই মাদক মামলার সহযোগী আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সোহাইল রানা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এখানে আটক বাণিজ্য বা ফিটিং মামলা দেওয়া হয়নি।
কথা বললে বাগমারা থানার (ওসি) অফিসার ইনচার্জ অরবৃন্দ সরকার বলেন, আটক বা ফিটিং মামলার কোনো সুযোগ নাই। তবে কেউ যদি এমন অভিযোগ করেন তাহলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।












