সোমবার, ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

oppo_1026

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী: উজানের ঢল ও টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই। ইতোমধ্যে পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২.০০ মিটার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার)। যা বিপদসীমার ১৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।

এর আগে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় বিপদসীমার ৫১ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। এ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে বিপদসীমা অতিক্রম করে।

নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন।

এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমলা উপজেলার কয়েকটি চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে চর ও নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমিসহ চলাচলের সড়ক। পানি আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এতে ক্রমশই বাড়ছে দুর্ভোগ।

ডিমলার পূর্ব খড়িবাড়ী এলাকার গোলেনুর বেগম বলেন, নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। কখন যে কী হয় ঠিক নেই।

টেপাখড়িবাড়ি এলাকার আব্দুর রহিম বলেন, শুক্রবার দুপুরে বাড়ির উঠানে পানি উঠেছে। আর একটু পানি বৃদ্ধি পেলেই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে।

ডিমলা পূর্বছানতাই এলাকার বাসিন্দা করিম মোল্লা বলেন, কয়েকদিনের বৃষ্টির পানিতে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। আশপাশের খালবিল ও নদীতে পানি বৃষ্টি পাচ্ছে। পানি বাড়ায় আমরা আতঙ্কে আছি।

জানতে চাইলে খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, বাইশ পুকুর এলাকায় প্রায় ২ শতাধিক বাড়ি-ঘরে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। সেইসাথে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও আবাদি বিভিন্ন ফসল।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আফাউদৌলা বলেন, উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে হঠাৎ ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও ভারী বৃষ্টি চলছে। এতে উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও আত্রাইয়ের পানি দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনো এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তিস্তা নদীর পানি আজ বিপৎসীমার কাছাকাছি বা অতিক্রমও করে যেতে পারে।

এ ব্যাপারে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, শনিবার থেকে তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *