শনিবার, ৯ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

থানচিতে মাতৃভাষা পাঠ্যপুস্তক বই পেল শিক্ষার্থীরা, নেই পাঠদানের শিক্ষক!

 

চিংথোয়াই অং মার্মা,থানচি (বান্দরবান): বান্দরবানের থানচিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নতুন বছরের প্রথম দিনেই পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি মাতৃভাষায় ছাপানো পাঠ্যপুস্তক বই পেল পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা।

 

থানচি হেডম্যান পাড়া সরকারি স্কুল, থানচি বাজার মডেল সরকারি স্কুল, টিমং পাড়া সরকারি স্কুল’সহ উপজেলার কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলের মারমা, চাকমা, ত্রিপুরা তিনটি সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে তাদের মাতৃভাষার বই বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, নতুন বছরে শুরুতে তিন সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা বই সংকটের কারণে উপজেলা সকল স্কুলের বিতরণ করার সম্ভব হয়নি, তবে কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের তাদের মাতৃভাষা বই বিতরণ করেছি। বর্তমানে বইগুলো চলে আসছে, চলতি মাসের ধাপে ধাপে সকল স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এবং স্কুলের প্রাক, ১ম, ২য় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের মাতৃভাষা বই পাচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে পাহাড়ে জনগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের নিজেদের মাতৃভাষা বর্ণমালা শিখতে ও সংরক্ষণে সরকারের এ উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। নতুন বছরে শুরুতে নিজেদের মাতৃভাষার বই পেয়ে ভীষণ খুশি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরাও। তবে স্কুলের মাতৃভাষার দক্ষ শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এসব বই সঠিকভাবে পড়তে পারছে না। তিন সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা শিক্ষাপাঠের নেই কোনো শিক্ষক! বিদ্যালয়গুলোতে মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন– অভিভাবকরা।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলোর ভাষা, বর্ণমালা এবং সংস্কৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে সরকার ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব মাতৃভাষায় বই পাঠ্য পুস্তকে লিপিবদ্ধ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বই হিসেবে বিতরণ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারে ২০২৫ সালে নতুন বছরে শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক বই বিতরণ করার হয়েছে। তারমধ্যে উপজেলায় পাঠ্য বই বিতরণের পাশাপাশি পাহাড়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর মারমা, চাকমা এবং ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার বই বিতরণ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে নিজ মাতৃভাষার পাঠ্য বই হাতে পেয়ে আনুমা মার্মা, উসিংশৈ মার্মা, সুস্মিতা ত্রিপুরাসহ প্রাথমিক শিক্ষার্থী’র অনেকেই বলেন, নতুন বছরে শুরুতে নতুন বই পেয়ে আমরা ভীষণ খুশি। পাঠ্য বইয়ের সঙ্গে নিজেদের মাতৃ ভাষায় বইও পেয়েছি। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজ মাতৃভাষার বর্ণমালা চিনতে ও জানতে পারবো আমরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মিজান উদ্দিন জানান, দুর্গম এলাকায় অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট এবং দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় মাতৃভাষায় পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছে না। জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার শিক্ষাপাঠদানের শিক্ষক সংকটের বিষয়ে জেলার শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের অবিহিত করেছি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ