
চিংথোয়াই অং মার্মা, থানচি (বান্দরবান): একসময় দুর্গম আর কাদামাটি পথ দিয়ে যেখানে যাতায়াত ছিল নিত্যদিনের সংগ্রাম।
সেখানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বান্দরবানের থানচিতে মেকহা পাড়া, মায়ারাম পাড়া আর হানারাম পাড়া– এই তিন পাহাড়ি গ্রামের এক কার্পেটিং সড়কের সুবাদে বদলে যাচ্ছে চিত্র।
কিন্তু এই উন্নয়নের মাঝেও রয়ে গেছে এক বড় সীমাবদ্ধতা। ক্যৌউক্ষ্যং ঝিড়িতে সেতু না থাকায় বর্ষা মৌসুমে এলেই ভোগান্তির শেষ নেই। সেখানেই সড়ক উন্নয়ন ও সেতুর অভাবে কষ্টে আছেন তিন গ্রামের ১২০ পরিবার। শুধু সড়ক নয়, বর্ষা মৌসুমসহ সারাবছর যেন সবধরনের সুবিধা ও যোগাযোগ স্থাপনে ঝিরিতে সেতু নির্মাণের দাবির জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রধান সড়ক হতে চেইনেজ ১৭৭০ মিটার দীর্ঘ সড়কটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রায় ৩ কোটি টাকার চুক্তিমূল্যে কার্পেটিং এই সড়কটি বাস্তবায়ন করেছে এম এম ট্রেডার্স।
গ্রাম বাসিন্দারা বলেছেন, “আগে তো কোনো রাস্তাই ছিল না। এখন রাস্তা হইছে, ভালো হইছে। কিন্তু বর্ষায় এই ঝিরি পার হওয়া যায় না। একটা সেতু হইলে সারা বছর সুবিধা হইতো।”
আমাদের প্রাণের দাবি, এই ঝিরিতে একটা সেতু নির্মাণ করার হোক। তবেই এই সড়কের সুফল বর্ষা মৌসুমসহ সারাবছর আমরা পাবো।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ক্যৌউক্ষ্যং ঝিরিতে শুষ্ক মৌসুমে সহজে যাতায়াত করা যায়, বর্ষায় হয়ে ওঠে এঝিড়ি ভয়ংকর রূপ। পানির প্রবল স্রোতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তিন গ্রামের যোগাযোগ। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়, জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা সদরে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকরা, তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি ওই তিন পাড়ার প্রধান কারবারিদের সঙ্গে কথা হয়, তারা বলেছেন– প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে শতাধিক মানুষ চলাচল করেন। কৃষিপণ্য পরিবহন, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সদর উপজেলার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। শুকনো মৌসুমে সুবিধা হলেও, বর্ষা মৌসুমে এলেই দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ। পাহাড়ি পানি ঢলে ক্যৌউহক্ষ্যং ঝিড়িতে সাঙ্গু নদীর পানি বেড়ে যায়, তাতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এই তিন গ্রামের ১২০ পরিবার। তাই সরকারের নিকট একটাই আবদার সেতু কিংবা কালর্ভাট নির্মাণ করা হোক।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো: আবু হানিফের সাথে যোগাযোগ করার হলে তিনি জানান, মেকহা বা রর্বাট পাড়ার সড়কে ব্রীজ চাহিদার লোকেশন জানেন না, তবে ওখানকার সেতু নির্মাণে গুরুত্বতা বুঝতে পেরেছি। এটি একটা প্রকল্পের ধুঁকানো হয়েছে। তবে কাজ শুরু করতে সময় লাগবে।