
মো. বদরুজ্জামান বদরুল, স্টাফ রিপোর্টার: সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার ভরারগাঁও গোফরাঘাট জলমহালে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে জোরপূর্বক মাছ লুটের ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার বিভিন্নস্থানে দিরাই থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ ও কচুয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি লংকেশ্বর দাস খোকা জানায়, গত ৫ মার্চ সকালে দিরাই পৌরসভার আশপাশের প্রায় দুই হাজার মানুষজন সংঘবদ্ধভাবে ভরারগাঁও গোফরাঘাট ইজারাকৃত জলমহালে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে জোরপূর্বক প্রায় কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় জলমহালের ইজারাদার ও কচুয়া সমবায় সমিতির সভাপতি লংকেশ্বর দাস খোকা দিরাই থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহারনামীয় ২২ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৮ জনকে গ্রেফতার করে হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, কচুয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ১৪২৮-১৪৩৩ বাংলা পর্যন্ত সরকারি নিয়ম নীতি মেনে উক্ত জলমহালের ইজারা গ্রহণ করে এবং নিয়মিত খাজনা, ভ্যাট পরিশোধ করে মাছ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা চালিয়ে আসছিলেন। গত দুই বছর ধরে জলমহালটিকে মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সকালে দিরাই থানার কল্যাণী গ্রামের জীবন রায় (৪৫), একই থানার চন্দ্রপুর গ্রামের এরশাদ মিয়া (৩২) ও হুমায়ূন (২০),বাউসী গ্রামের বাধন বৈষ্ণব (২২),সমিরন বৈষ্ণব (১৯), মৃদুল বৈষ্ণব (১৯), ভাঙ্গাডহর গ্রামের পিন্টু তালুকদার (৩২),মৃদুল দাস (২৮), স্বরমঙ্গল গ্রামের আব্দুল তাহিদ (৪০), একই গ্রামের রমজান (৪০),রায়হান (৩৮), দবির মিয়া (৩৫), ছালিক মিয়া(৩৮), সম্রাট মিয়া (৫৫), সাজিদ মিয়া (২৭),হামিদ মিয়া (৪০),জিয়াবুর (৪০), ফরদি মিয়া (৪৫), নাহিদ (২৭), মোহন মিয়া (৪০), কায়েছ মিয়া এবং ঘাগটিয়া গ্রামের রজত মিয়া (৩৫) এই ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আরো দুই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তি জলমহালে প্রবেশ করে অবৈধভাবে মাছ ধরতে শুরু করেন। জলমহালে থাকা আইড়, বোয়াল, রুই, কাতলা, কার্পু, ঘাস কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় কোটি টাকার মাছ অবৈধভাবে ধরে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে জীবন রায়, এরশাদ মিয়া, হুমায়ূন, বাধঁন বৈষ্ণব, সমরিন বৈষ্ণব, মৃদুল বৈষ্ণব, পিন্টু তালুকদার ও মৃদুল দাসকে আটক করা হয়। এ সময় পুলিশ আটককৃতদের কাছ থেকে মাছ ধরার সরঞ্জাম থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ ঘটনায় দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জসহ থানা পুলিশের একাধিক টিম এবং উপজেলার অ্যাসিল্যান্ড দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরেজমিনে জলমহালটি পরিদর্শন করেন। জেলার অন্যান্য বিল থেকে যারা অবৈধভাবে মাছ আহরণের চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে দিরাই থানার ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাক ৮ জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।