শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দুই বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তি হলেন কলেজের অধ্যক্ষ

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: প্রায় দু-বছর আগে মৃত্যু বরণ করা এক অধ্যাপককে কুড়িগ্রামের রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জড়িয়ে পরায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো: মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল ৫৩ বছর বয়সে মারা যান। তাঁর হার্টের সমস্যা ছিল।
গত মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো: মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি/পদায়ন করা হয়। ওই তালিকায় তিনি ১৩ নম্বর সিরিয়ালে রয়েছেন। এতে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনকে অধ্যাপক পদ থেকে মাউশি অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.টি.এম শওকত আকবর বলেন,গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কলেজ অধ্যক্ষ আন ম আজিজুর রহমান অবসরে যাওয়ার পর চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। মাউশি থেকে এখন এখানে অধ্যক্ষ নিয়োগ হলে আমি পূর্বের পদে বহাল থাকব। মৃত ব্যক্তির পদায়নের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে জানতে সদ্য পদায়ন পাওয়া সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁর স্ত্রী তাহমিনা শবনম বলেন,২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসী বাহিনীর রাম দার কোপে আমার স্বামীর বাম হাত ও পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলে। এছাড়াও তিনি হার্টের রোগী ছিলেন। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল তিনি মারা যান।
২০২৩ সালের মে মাসের দিকে সরকারি গোয়েন্দা শাখার লোকজন আমার কাছে তাঁর পদায়নের বিষয়ে যোগাযোগ করলে আমি তাঁদের জানিয়েছিলাম যে আমার স্বামী মারা গেছেন। এছাড়াও আমি আমার স্বামীর পেনশনের টাকাও উত্তোলন করেছি। এতো দিন পর মাউশি তাঁকে পদায়ন করলো। পদায়ন হলে তাঁর অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। মৃত জামাল উদ্দীন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। অধ্যাপক জামাল উদ্দীন ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একজন মৃত ব্যক্তির নাম কীভাবে পদায়নের তালিকায় এলো,তা নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *