
আবু শামা, কুবি প্রতিনিধি: দেশে আবারও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দিপু মনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে(কুবি) শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ক্লাব কাম গেস্ট হাউজ ও ডরমিটরির উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, পনেরো বছর আগেও বাংলাদেশে একটা লোটেরা সম্প্রদায় তৈরী করেছিল, স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে স্থান করে দিয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধীরা, পঁচাত্তর ঘাতকরা, ২১ আগষ্টের গ্রনেড হামলার সন্ত্রাসীরা নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও তৎপর হচ্ছে, দেশে অস্থিতিশীল করার অপ্রচার চালাচ্ছে। বিশেষ করে তাদের টার্গেট হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্টান। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা, তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে অরাজকতার কোন জায়গা নেই।স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম শক্তি হচ্ছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। তোমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধু সার্টিফেকেট বা বিসিএসের কারখানা তৈরি না করে গবেষণার প্রতি আরও মনোযোগী হতে হবে। তিনি আরও বলেন স্মার্ট বাংলাদেশে কোন স্বাধীনতা বিরোধীদের স্থান হতে পারে না। শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে পড়াশোনা করুক না কেন তারা যেন ভাষাগত দক্ষতা, আইসিটি জ্ঞান, উদ্যাক্তা হবার জ্ঞান এবং সফটস্কিলে দক্ষ হতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ জ্ঞান চর্চা এবং জ্ঞান সৃষ্টি সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী তাদের যে বিরাট ভূমিকা রয়েছে তারা কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তার উদাহরণ হিসেবে এডি সাইন্টিফিক ইনডেক্স র্যাংকিং এ গত বছর যেখানে ২৮ জন শিক্ষক স্হান পেয়েছিলেন সেখানে এবছর তার সংখ্যা দাড়িঁয়েছে ৬১ জনে। হয়ত অবকাঠামোগত যে সীমাবদ্ধতা আপনাদের আছে তা শীঘ্রই আমরা কাটিয়ে উঠব।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মূল কাজ জ্ঞান চর্চা এবং জ্ঞান সৃষ্টি সেই কাজে আজকে যে ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হল গবেষকদের তার জন্য উপাচার্য সহ তার পুরো দলকে আমি সাধুবাদ জনায় কৃতজ্ঞতা জানায়। কারণ যেকোন ভালো কাজে উৎসাহ দিতে হয় বাহবা দিতে হয়। বাহবা বা উৎসাহ ভালো কাজে অনুপ্রেরণা যোগায়। তিনি আরও বলেন আপনারা গুচ্ছ পরীক্ষার প্রাপ্ত অর্থ থেকে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়েছেন। তাছাড়া আপনারা ছাত্রীদের সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও শুদ্ধাচার পুরষ্কার দিয়েছেন তা নারী শিক্ষায় ভূমিকা রাখবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, আমরা সবাই রাজনৈতিক কর্মী, আমরা রাজনীতির মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠানকে আরো সমৃদ্ধ করব। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক কোন চর্চা বা অংশ যাতে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধির পথে কখনো বাধার সৃষ্টি না করে
এ সময় অনুষ্ঠানে গবেষণায় অবদানের জন্য তিন ক্যাটাগরিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষককে ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এরমধ্যে আউটস্ট্যান্ডিংয়ে ৪জন হলেন, মোঃ শরীফ হোসেন, মোহাম্মদ শফিউল্লাহ, স্বপন চন্দ্র মজুমদার এবং মোহাম্মদ বেলাল উদ্দীন। স্পেশাল ক্যাটাগরিতে ৩ জন হলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস, মোঃ খলিলুর রহমান এবং মোহাম্মদ কামাল হোসাইন। জেনারেল ক্যাটাগরির ১০ জন হলেন, পার্থ চক্রবর্তী, মিথুন কুমার দাস, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মেশকাত হাজান, সাদিয়া জাহান, ফয়েজ আহাম্মেদ, শারমিন আকতার রূপা, মোঃ আবদুল মাজেদ পাটোয়ার, প্রদীপ দেবনাথ এবং মোঃ আবদুল হাকিম।
আলোচনায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিস্ট্রার, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. জামাল নাছের, বিভিন্ন বিভাগের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ডরমিটরি ও আলোচনা সভার আগে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে লাল গালিচার সংবর্ধনা দেওয়া হয়।