নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী স্থানীয় সালিশে জুড়ি বোর্ড গঠন করতে গিয়ে স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়েন।
সোমবার দুপুরে এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ইউপি সদস্য সৈয়দ নাজমুল হক এর বাড়িতে চেয়ারম্যানের উপর চড়াও হলে আত্মরক্ষায় তিনি সেই বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সর্দারগণ চেয়ারম্যানকে শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে রক্ষা করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সোমবার কাইতলা সৈয়দ বাড়িতে গতকাল রবিবার ঘটে যাওয়া একটি মারামারির ঘটনা নিষ্পত্তি করতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সভা আহ্বান করেন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী।
এক পর্যায়ে তিনি ৭ সদস্যের একটি জুড়ি বোর্ড গঠন করে দেন। জুড়ি বোর্ডের নাম ঘোষণা করার পর সভায় উপস্থিত কিছু ব্যক্তিবর্গ জুড়ি বোর্ডের এক সদস্যকে নিয়ে আপত্তি তুললে হট্টগোল শুরু হয়। সে সময় পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে মারামারিতে রূপ নিলে ইউপি চেয়ারম্যান নিজেকে রক্ষায় ইউপি সদস্য সৈয়দ নাজমুল হক এর বাড়িতে ঢুকে পড়েন।
এই খবরটি গ্রামে জানাজানি হয়ে গেলে উত্তেজিত জনতার পক্ষে লোকজন বাড়তে থাকে। তারা বাড়ির সামনে অবস্থান করে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা পুলিশ ফোন দিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ তুলে আটক করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী দুই মেয়াদে চেয়ারম্যান থাকাকালীন এলাকায় কোনো কাজ কর্ম না করার পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।
বিষয়টি নিশ্চিত হতে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, গ্রামের কিছু বখাটে যুবক ও মাদক কারবারি মিলে আমার উপর চড়াও হয়। এই লোকগুলো বিগত দিনে কোনঠাসা হয়ে ছিল তাদের অপকর্মের জন্য। সরকার পতনের পর তাদের বেপরোয়া আচরণে আমি সহ সাধারণ মানুষ অসহায়। আজকের পরিস্থিতি অনুধাবন করে আমি নিজেকে রক্ষা করতে আমার ইউপি সদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। আমি ঘর থেকে বের হলেই হামলা চালাতো তারা। আমি কোন রক্তপাত চাই না। তাই ধৈর্য ধরে ছিলাম।
পরে ঘটনাস্থল উপস্থিত হন নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির। সেখানে উত্তেজিত জনতাকে তিনি শান্ত করে চেয়ারম্যানের পদত্যাগের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা তুলে ধরেন। ইউপি চেয়ারম্যানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও উপস্থিত সবাইকে তিনি আশ্বাস দেন।